রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ০২ নং রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর মমিনপুরে বাড়ি থেকে দক্ষিণে মাত্র ৩০০ গজ সামনে একটি জলাশয় আকৃতির পুকুরে থেকে মিলন টপ্য (৩৮) নামে এক আদিবাসী যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিলন টপ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুকরের পাল চড়াতেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। স্থানীয়দের ধারণা ওই যুবক সম্ভবত মাত্রাতিরিক্ত চোলাইমদ অথবা তাদের নিজেদের তৈরি হাঁড়িয়া নামক মাদক জাতীয় নেশা সেবন করে অচেতন হয়ে পানিতে ডুবে দু-তিনদিন পূর্বে মারা যেতে পারেন। স্থানীয়রা জানান, মিলন টপ্য, বলদিপুকুর বাজার সংলগ্ন মমিনপুর গ্রামের মৃত-মঙ্গল টপ্যর পুত্র। মিলন শুকরের পাল চড়ে বেশ কিছুদিন আগে নিজ বাড়ি মমিনপুরে এসেছিলেন। ছুটিতে আসলে নিয়মিত চোলাই মদ এবং হাঁড়িয়া পান করতেন। হাঁড়িয়া সেবন করে যখন যেখানে খুশি সেখানেই রাত্রি যাপন করতেন। মৃতদেহ পাওয়ার চার-পাঁচদিন পূর্বে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১১ টার সময় ওই জলাশয়ে পীঠ উপরে ভাসন্ত অবস্থায় একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে মিঠাপুকুর থানা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উত্তোলন করলে পরিবারের লোকজন মিলনের লাশ সনাক্ত করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের দাবি, মমিনপুর গ্রামে প্রচুর পরিমানে চোলাইমদ এবং হাড়িয়া উৎপন্ন হয়। হাঁড়িয়া এবং মদের জন্য বিখ্যাত হওয়ায় এই গ্রামে দিনে শতশত মাদক সেবীরা আসে। মাদকের ভয়াবহ প্রবণতায় কিছুদিন পূর্বেই একটি হত্যাকান্ড সহ পরপর তিনটি ধর্ষণের মত ঘটনা সংঘটিত হয়। স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার মাসিক চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় এই গ্রামে বাড়ছে চুরি, ছিনতাই এবং ধর্ষনের মতো ঘটনা। মিলন টপ্যর মৃত্যুর ঘটনাটিও মাদক সংক্রান্ত ঝামেলা হতে পারে এবং এরজন্য তারা মাদককেই দায়ি করেছেন। এদিকে মিলন টপ্যর মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই এবং ভাবি তার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কারনে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবি করেছেন। যদিও এ বিষয়টি মানতে নারাজ প্রতিবেশীরা। তাদের দাবি, এভাবেই আদিবাসী পাড়ায় মিথ্যা অপবাদ আর মামলায় ফাঁসিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ সুবিধা ভোগ করে। মিলনের মৃত্যুর ঘটনা সম্পূর্ণ মাদক সেবনের কারণে বলে তারা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় অযথা কাউকে হয়রানি না করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে তারা অনুরোধ জানান। মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।