কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিন সোমবার (১৩ নভেম্বর)। সাহিত্যের প্রায় সকল শাখাতেই তাঁর সাবলীল বিচরণ ছিল। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ তথা সব ক্ষেত্রেই তাঁর লেখনি বাংলা সাহিত্যে ভিন্নমাত্রা দিয়েছিল।এজন্যই বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক বলা হয় তাঁকে।
বাংলাদেশের শোবিজেরও একজন অগ্রগামী দিশারী ছিলেন তিনি। নাটক, চলচ্চিত্র রচনা ও পরিচালনায় তিনি দেশে আলাদা একটি ধারার প্রচলন ঘটিয়েছেন।এই কথাসাহিত্যিক জন্মেছিলেন ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতু্বপুরে। আজ তাঁর ৭৫তম জন্মদিন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন।
শিল্প ও সাহিত্যের সব শাখাতেই সফল এই ব্যক্তিত্বের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশ হয় ১৯৭২ সালে। এরপর তাঁর রচিত তিন শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ‘আগুনের পরশমণি’ ছবিটি পরিচালনার মধ্য দিয়ে ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।এরপর একে একে তাঁর নির্মাণে মুক্তি পায় ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ (২০০০) ও ‘দুই দুয়ারী’ (২০০১) ‘চন্দ্রকথা’ (২০০৩), ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪), ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’ (২০০৬) ‘আমার আছে জল’ (২০০৮) ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ (২০১২)।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদ বিশেষ করে সাহিত্যে গভীর প্রভাব ফেলেছেন। বিশেষ করে তাঁর সৃষ্টি হিমু ও মিসির আলী চরিত্রে আজও বুদ হয়ে আছে পাঠক ও ভক্তরা। তাঁর হাত ধরে শোবিজেও অনেক অভিনয় ও সঙ্গীতশিল্পী প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন অভিনয়, নৃত্যের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও প্রশংসিত। তাঁর বড় ছেলে নুহাশ হুমায়ূনও সম্প্রতি নাটক নির্মাণে নাম লিখিয়েছেন।২০১২ সালের ১৯ জুলাই ৬৪ বছর বয়সে হুমায়ূন আহমেদ ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। ২৪ জুলাই নন্দিত এই লেখকের প্রিয় জায়গা নুহাশ পল্লীতে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।এদিকে (১৩ নভেম্বর) এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ আয়োজন করা হচ্ছে তাঁর জন্মস্থান নেত্রকোণা এবং গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে।