আজ ৩১ অক্টোবর, রোজ: মঙ্গলবার, বেলা ১১ ঘটিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শের-ই বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় অনুমোদন দেওয়া হয় ৪১৭৪ কোটি ৬৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাবল স্ট্যাইড (ঝুলন্ত সেতু) নির্মাণ করা হবে।
উক্ত একনেক সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান; কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহ্মুদ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গজারিয়া-মতলব সংযোগ সেতু বাস্তবায়নে বিশেষ অবদান রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং বাংলাদেশ সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ভিখারুদ্দৌলা চৌধুরী (বুলু)। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্য আধুনিক বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সমৃদ্ধি করতে গজারিয়া-মতলব সংযোগ সেতু বাস্তবায়নে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং ঐতিহ্যবাহী কালীপুর চৌধুরী বাড়ির কৃতি সন্তান জনাব ভিখারুদ্দৌলা চৌধুরী(বুলু) যুগ্ম-সচিব (বিসিএস প্রশাসন) পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, সেতু বিভাগ ভূমিকা ছিলো মুখ্য।
সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৮৫ কিলোমিটার। সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৭.৫১ কিলোমিটার (গজারিয়া অংশে ৫.৪৬০ কিলোমিটার ও মতলব উত্তর অংশে ২.০৫৫ কিলোমিটার)। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক N1 এর সাথে ইন্টারচেঞ্জ ডেভেলপমেন্ট ২.১ কিলোমিটার। নদী শাসন কাজের দৈর্ঘ্য ২.২ কিলোমিটার। টোল প্লাজা একটি এবং ওজন স্টেশন হবে দুইটি। ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স হবে ২৫ মিটার। এই সেতু বাস্তবায়ন হলে জিডিপি প্রবৃদ্বির হার বাড়বে ০.২৩%।
গজারিয়া-মতলব সেতুটি ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে। এ সেতু নির্মাণের ফলে চাঁদপুর, লক্ষীপুর, নোয়াখালী এবং ভোলা জেলার সাথে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে যাতায়াতের দূরত্ব সময় এবং ব্যয় হ্রাস পাবে।সেতুটি ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (N-1) এর উপর যানবাহনের চাপ কমবে। সেই সাথে চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত মতলব উত্তর ও হাইমচর উপজেলায় অনুমোদিত দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে পণ্য পরিবহন সহজ হবে।
এই সেতু দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অবদান রাখবে। নদীর অববাহিকায় নতুন শিল্পাঞ্চল সহ পর্যটন শিল্প বিকাশের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। যা অত্র অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সেতুটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১.৮ কোটি জনগণ প্রত্যক্ষভাবে সুবিধা প্রাপ্ত হবে।
সেতুটির মধ্যে নদীর মূল প্রবাহে কোন পিলার থাকবে না। এজন্য নদীর প্রবাহে কোন বাধা সৃষ্টি হবে না।সেতু নির্মাণে ই ডি সি এফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড) কোরিয়া এক্সিম ব্যাংক সহজ শর্তে (০.০১%-০.০৫%) হারে ঋণ দিবে ৩,৫১৩ কোটি ৯৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা এবং GOV হতে ঋণের পরিমাণ ৬৬০ কোটি ৭২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। টাকা ফেরত প্রদানের ম্যাচিউরিটি পিরিয়ড ৪০ বছর এবং গ্রেস পিরিয়ড ১৫ বছর।