ঘূর্ণিঝড় সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নস্থ ৫নং ওর্য়াডের পশ্চিম বাকখালী মধ্যেরধারী এলাকার উপকূলের মানুষেরা। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন ‘এর ভয়ে অনেকটা নিরুপায় হয়ে ঘরে বসে আসছিলেন নদী তীরবর্তী এই এলাকার মানুষ। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার কোটি ৪২ লক্ষ ৩ হাজার ৮ শত আশি টাকা ব্যয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বহুমূখী দূর্যোগ আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রকল্প (এমডিএসপি) আওতায় ৮৫নং মধ্যেরধারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সাইক্লোনশেল্টার তৈরী ও রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন হাতে নেয় সরকার। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় মানুষদের দূর্যোগকালীন আশ্রয়নে মোট ৭৫ টি উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, অন্যান্য উপজেলাতে কাজ শেষ অনেক আগেই। ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে শুরু হয়ে ২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২৪ মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সীতাকুণ্ডে সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি প্রকল্পের ২০শতাংশ কাজ। প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও, বার বার বিষয়টি নজরে আনলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ ও ‘মূখার’ মতো শক্তিশালী প্রাকৃতিক দূর্যোগে উপকূলের এই মানুষদের অনেকটা অসহায়ত্বের মতো এসব মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আশেপাশে এক-দুই কিলোমিটার পর সাইক্লোনশেল্টার থাকলেও দূরত্বের কারণে যেতে অনাগ্রহী এলাকাবাসী। বেশি ঝূঁকিতে রয়েছ নারী ও শিশুরা। তাছাড়া যাতায়তের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়াতে ঘরেই থাকতে হচ্ছে তাদের। উপজেলার মোট ৫৯ টি সাইক্লোনশেল্টার এর মধ্যেও নেই এই ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লোনশেল্টারটির নাম, অত্র ওর্য়াডের মানুষদের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পাশ্ববর্তী দুই ওয়ার্ড মিলে একটি স্কুলে সাইক্লোনশেল্টা র’ ব্যবস্থা করা হয়েছে। অত্র ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ফজলুল হক জানান, আমাদের এই উপকূলীয় এলাকায় ২ থেকে আড়াই হাজার মানুষের বসবাস, বর্তমানে এখানে কোন সাইক্লোনশেল্টার নেই, আমাদের এলাকা থেকে নদীর দূরত্ব মাত্র এক থেকে দেড় কিলোমিটার। প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে জলোচ্ছ্বাস হলে অতিসহজে এই এলাকা প্লাবিত হয়ে যাবে, যার কারণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সম্ভবনা রয়েছে। সরকারী ভাবে যে সাইক্লোনশেল্টার আসছে সেটার মাত্র সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি ২০শতাংশ কাজ। সাইক্লোনশেল্টার র’ কাজ অতিদ্রুত সম্পূর্ণ হলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারবে তাই দ্রুত কাজ শেষ করার প্রয়োজন। এলাকাবাসীর অভিযোগ জন্ম থেকেই এমন ঘূর্ণিঝড়-সুনামি মোকাবেলা করে আসছে তবে সাইক্লোনশেল্টার নির্মাণের কথা শুনে কিছুটা আশায় বুক বাঁধলেও সেই গুড়ে অনেকটা বালি ছিঁটানোর মতো অবস্থা। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর লেগেছে শুধু অর্ধেক পিলার উঠতে। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন শুধু আশার বাণী শুনালেও সাইক্লোনশেল্টার আর হয়ে উঠেনি। শিক্ষর্থীরাও অনেকটা স্কুল বিমূখ। শিক্ষাকার্যক্রম চলছে টিনের একটি ঘরে।