রাজশাহী জেলার এয়ারপোর্ট থানার ভোলাবাড়ী গ্রামের শাকিল হোসেন (২৭) নামক এক যুবকের বিষ পান করে রহস্য জনক মৃত্যু ঘটে। এ বিষয়ে মৃতের পিতা এয়ারপোর্ট থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয় যে ” গত ১৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ বেলা আনুমানিক ১২ টার সময় মৃত শাকিল হোসেন তার শ্বশুর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কাঠ ব্যবসায়ি মোঃ কুরবান আলির সাথে জমি ক্রয় করা টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে অভিমান করে বিষপান করে”। এদিকে মৃত শাকিল হোসেনের পিতা গণমাধ্যমকে জানান তার ছেলে তার ছেল শ্বশুর কুরবান আলিকে জমি কেনার জন্য ২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করেন, কিন্তু কুরবান আলি জমি কিনে না আবার টাকাও ফেরত দেয় না। টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্যই তার ছেলে শাকিলের সাথে বাকবিতন্ডা হয় এবং তার ছেলের বউ দূর্গাপুরে নিজ মায়ের বাসায় চলে যায়। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে আরও বলেন তার ছেলে বিষ খাওয়ার পর হাসপাতালেও তারা নিয়ে আসেনি, আমি আমার স্ত্রী আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাই, এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তারা কেউ আমার ছেলেকে দেখতেও আসেনি এমনকি কোন খোঁজ খবর ও নেয়নি। মৃত্যুর পর আমার ছেলের দাফনে তারা কেউ উপস্থিত হয়নি এমনকি আমার ছেলের বউও শেষ দেখা টা দেখতে আসেনি এতে কি স্বাভাবিক ভাবে বোঝা যায় না তারা আমার ছেলেকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে?” এ বিষয়ে মৃত শাকিলের শ্বশুরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ২ লক্ষ ৮৫ টাকার কথা অস্বীকার করে শুধু ৮৫ হাজার টাকার কথা বলেন এবং এও বলেন ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে ৪০ হাজার টাকা আমার মেয়ে কিস্তি তুলে দিয়েছিলো। দাফন কাজে উপস্থিত না হবার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার জামাই এর পরিবারের লোকজন আমাদেরকে হুমকি দিয়েছে তাই ভয়ে যাইনি এছাড়াও মৃত শাকিলের স্ত্রী শাকিলার প্রতি আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন “আমি হাসপাতালে গেছিলাম আমাকে দেখতে দেয়া হয়নি তবে আমার ৬ বছরের মেয়ে তাদের বাসায় আছে। মৃত স্বামীকে ভয়ে দেখতে আসেনি উল্লেখ করলেও হুমকির বিষয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হোন নি কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি মৃত্যুর খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পরেছি।” মৃত শাকিলের পরিবার থেকে জানানো হয় শাকিল গত ১৫/১০/ ২৩ তারিখে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের ৪২ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলো, বিষ পান করার কারনে তার কন্ঠনালীতে প্রচুর জ্বালা পোড়া করতো এবং অত্যাধিক ছটফট করতো ও গোঁগাতো। তার পায়খানা দিয়ে রক্ত বের হতো এবং সবসময় অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হতো। ১৫/১০/২৩ থেকে ২২/১০/২৩ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো ২৩ তারিখে বাসায় নিয়ে আসার পর ২৪ তারিখ রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে শাকিল মৃত্যু বরণ করে। পরবর্তীতে এয়ারপোর্ট থানা একটি ইউডি মামলা করে লাশ পোস্টমর্টেম করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। এবিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ জানান “মৃত্যুর সঠিক কারন সনাক্ত করতে লাশ পোস্টমর্টেম করা হয়েছে রিপোর্ট আসার পর আমরা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।” তবে মৃত শাকিলের পরিবারের সদস্যদের দাবি টাকার জন্য তার শ্বশুর ও বউ যোগ সাজোশ করে শাকিলকে ঘাস মারা বিষ খাইয়েছে। শাকিল পেশায় রং মিস্ত্রির কাজ করতো তার একটি ৬ বছরের মেয়ে রয়েছে। এই মৃত্যু নিয়ে মৃতের পরিবার আত্নীয় স্বজনের মনের মধ্যে রহস্য বিরাজ করছে আসলেই শাকিল বিষ খেয়েছে নাকি তাকে জোর করে বা কোন ভাবে বাধ্য করেছে বিষ খেতে।