প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মীদের গোলটেবিল বৈঠকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে হবে :রাষ্ট্রদূত বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর।
আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে হবে। এর কারণ, স্মার্ট নাগরিক ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে-বিদেশে নাগরিকদের স্মার্ট গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমিরাতে গঠিত জনতা ব্যাংকের চারটি শাখা থেকে যারা ঋণ খেলাপি হয়ে বিলাস জীবন যাপন করছেন তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ১৯৮৫ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকের যে রকম চাহিদা ছিল, তা এখন আর সেই চাহিদা গুলো নেই। এদেশটির অনেক উন্নত হয়েছে। তাদের এখন অদক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন নেই। তাই বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিকদেকে এই দেশটিতে আসার আহ্বান জানান।
গত শুক্রবার রাতে আরব আমিরাতে
দেরা দুবাইস্থ রেডিসন ব্লু হোটেলে বসবাসরত বাংলাদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবাসীদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলহাজ্ব ইয়াকুব সৈনিকের সভাপতিত্বে ও মাহবুব হাসান হ্নদয় ও তিশা সেনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর।
টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন দুবাই নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মীদের আয়োজিত গোলটেবিলের আয়োজন সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। গণমাধ্যম কর্মীদের কর্তৃক আয়োজিত এরকম গোল টেবিল বৈঠক তেমন একটা দেখিনি।
এটি একটি ভালো উদ্যোগ এবং এই প্রথম একটি গোল টেবিল বৈঠক । এ ভাবে যদি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও এই রকম উদ্যোগ গ্রহণ করে তবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনেক সহায়ক হবে।’
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাইয়ের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘দেশে ও প্রবাসিদের জীবনমান উন্নয়নে ১৫০টির বেশি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। প্রবাসীদের বীমার আওতায় এনেছে সরকার। ১০ লাখ টাকা বীমায় পাচ্ছেন বাংলাদেশী প্রবাসীরা।’
আরও বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বাবুল, কনস্যুলেটর প্রেস কাউন্সিলর মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, সিআইপি আয়ুব আলী বাবুল প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা সাইফুল ইসলাম তালুকদার। আলোচনায় অংশ নেন মোহাম্মদ রাজা মল্লিক, সিআইপি শেখ ফরিদ আহমেদ, ইসমাঈল গণি চৌধুরী, সাইফুদ্দিন আহমদ, সেলিম উদ্দিন চৌধুরী, নাসির তালুকদার,সওকত আকবর, মোজাহের উল্লাহ মিয়া, সেলিম রেজা, নেসার রেজা খান, আবুল কাশেম, সিআইপি শিমুল মোস্তফা, মোহাম্মদ মনসুর সবুর, এস এ টিভি সাংবাদিক সিরাজুল হক, বাংলা টিভি ফয়সাল সিদ্দিকী ববি, ৭১ টিভি লুৎফুর রহমান, নিউজ ২৪ আবদুল আলীম সাইফুল, আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট সদস্যবৃন্দ ও বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটি ইউ এ শাখার সদস্যবৃন্দ সকল ব্যক্তিবর্গগণ।
প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক জনতা ব্যাংকে রয়েছে ১০ থেকে ১২ ভাগ ঋণ খেলাপি। রাষ্ট্রের এ টাকা ঋণ নিয়ে অনেকের বিলাশ বহুল জীবন যাপন করলেও পরিশোধ করছেন না ঋণ। এসব ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তিনি।’
কমিউনিটি নেতা ইফতেখার হোসেন বাবুল বলেছেন, ‘এমন গোলটেবিল বার বার হলে দেশ এগিয়ে যাবে অদম্য গতিতে। সাধারণ প্রবাসিদের নানা সমস্যা লাঘব হবে এমন প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের।’
সিআইপি শেখ ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ‘রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে সরকার ২.৫ ভাগ প্রণোদনা দেন। কিন্তু সরকার যদি চার পারসেন্ট দেন তাহলে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের ক্ষেত্রে উৎসাহিত হবেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আলহাজ্ব ইয়াকুব সৈনিক বলেছেন, মতপার্থক্য কখনো ভালো দিক না। তাই যে যেই সংগঠন করুক না কেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত।