নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সদর ডাকবাংলো মাঠে উৎসবটি উপলক্ষ্যে আদিবাসী সম্মেলন সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী তরুণ-তরুণীরা রঙিন সাজে সেজে বাদ্যের তালে নেচে গেয়ে কারাম উৎসব উদ্যাপন করেন। অনুষ্ঠান উপভোগ করেন হাজারো মানুষ।সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আদিবাসী জাতি গোষ্ঠীর মানুষেরা গ্রামে গ্রামে কারাম বৃক্ষের (খিল কদম) ডাল পূজাকে কেন্দ্র করে এই উৎসবের আয়োজন করেন। ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার কাছে মনের কামনা-বাসনা পূরণের লক্ষ্যে প্রার্থনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের অংশ হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে জাতীয় আদিবাসী পরিষদসহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনগুলো এই পূজাকে ঘিরে নওগাঁর বিভিন্ন অঞ্চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে।দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের প্রথম দিন গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নর-নারী। গতকাল দিনভর উপোস ছিলেন তাঁরা। সন্ধ্যার পর কারামগাছের (খিল কদম) ডাল বেদিতে বসানোর পর শুরু হয় পূজা। এরপর তাঁরা দিয়াবাতি, ফলমূল ও নিজেদের বানানো পিঠা সজ্জিত ডালা বা থালা সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে পূজার বেদিতে উৎসর্গ করেন। রাত একটু গভীর হলে শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা গ্রামের পূজা স্থানে জড়ো হয়। সেখানে একজন পুরোহিত নতুন প্রজন্মের কাছে কিচ্ছা আকারে কারাম পূজার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। কিচ্ছা বলা শেষ হলে উপোস থাকা নারীরা পরস্পরকে খাবার খাইয়ে উপোস ভেঙে ফেলেন। পরে বেদিতে পুঁতে রাখা কারাম ডালের চারপাশ ঘুরে ঘুরে ঢাক-ঢোল ও মাদলের বাজনার তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন আদিবাসী তরুণীরা।
উপজেলার ডাক বাংলো মাঠে সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় মহাদেবপুর, নিয়ামতপুর উপজেলা ছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলা এবং বাইরের জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ১০৭টি সাংস্কৃতিক দলগুলো অংশ নেয়। দলগুলো ডাকবাংলো মাঠে নিজ নিজ জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য তুলে ধরে ঢাক-ঢোল, মাদল ও করতালের (ঝুমকি) তালেতালে নাচ ও গান পরিবেশন করে।