পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দাসপাড়া কাঁচা বাজার পাকা সড়ক থেকে উত্তর প্রান্তে পার্শ্ববর্তী বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রান্ত কর্পূলকাঠী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘ ২৮বছর ধরে ভাঙাচোড়া অবস্থায় পড়ে আছে। এই রাস্তায় জনদুর্ভোগ এখন চরমে পৌছে গেছে। বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় প্রতিদিন বাউফল উপজেলার ৩গ্রাম আর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও বহরমপুর ইউনিয়নের ৪গ্রামের স্কুল, কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২১হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে থাকে। দীর্ঘ বছর ধরে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার বেশির ভাগ অংশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চলাচলের অনুপযুক্ত এ রাস্তাটিতে প্রতিনিয়ত পণ্যবাহী বা যাত্রীবাহী গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। এতে দশমিনা-বাউফল উপজেলার কমলমতি শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে।
অপরদিকে, দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন প্রানকেন্দ্রে গছানী সরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গছানী মাধ্যমিক ও কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাঁশবাড়িয়া রজ্জাবিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও আব্দুর রসিদ তালুকদার সরকারি ডিগ্রী কলেজ এবং চর-হোসনাবাদ আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাসহ তিন গ্রামে ১০টি মসজিদ এবং দুটি বাজারের চরম ভোগান্তি । এতগুলো প্রতিষ্ঠান আর বিশাল জনগোষ্ঠীর চলাচলের জন্য একটিমাত্র রাস্তা থাকলেও তা চলাচলের প্রায় অযোগ্য। একটু বৃষ্টি হলেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে প্রতিনিয়ত পড়ছে গ্রামবাসী।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিন দাস পাড়া গ্রামের মো. শাহ আলম রাড়ি, নাজমুল হক, জামাল হাওলাদার, সংকর চন্দ্র ও জামাল মৃধা জানান, গছানী বাজারের পাকার মাথা হতে উত্তর দিকে দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে ইউনয়নের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। পাকা করা হয় তবেই জনগণের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।
বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের মো. আলা উদ্দিন হাওলাদার, ফোরকান তালুকদার ও ইউনুছ হোসেন বলেন, আমরা চরম অবহেলিত এলাকায় বসবাস করি, যার কারণে ৪০ বছরেও গ্রামীণ এই অবহেলিত রাস্তাটিতে এখন পর্যন্ত আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। জরুরি মুহূর্তে বয়স্ক মানুষ ও রোগীকে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। চলাচলের জন্য আর কোনো রাস্তা নেই। এতে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষাকালে হালকা বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাদামাটি ও পিচ্ছিলসহ বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। শুকনার মৌসুমে দিনের বেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও রাতে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। জরুরি মুহূর্তে কোনো রোগী অথবা গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে পড়তে হয় নিদারুণ কষ্টে। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অনেকবার জানানোর পরও রাস্তাটি এখনো বেহাল পড়ে আছে। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ৬নম্বর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এই রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন জানান, কাঁচা রাস্তাটি পাকা করনের প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করা হয়েছে আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা করন করা হবে।