রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে এক ব্যক্তির হাতের কব্জি বিচ্ছিন হয়ে গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাজশাহী মহানগরের খুলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনর করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, নগরীর খুলিপাড়া এলাকর শুকুর আলীর ছেলে মুকুল (৪৫), বদর আলীর ছেলে আলতাব (৪৫), আনসার আলীর ছেলে মনা (২৬) ও মনিরুল ইসলামের ছেলে সজল(২৩)। বেশ কিছুদিন থেকেই আহত ও অভিযুক্ত আজিজ বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর কোনো সুরহা বা মীমাংসা হয় নি। এরই মধ্যে সিটি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২২জুন, ২০২৩) দুপুরে উভয় আজিজ গ্রূপ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আলতাফের বাম হাতের কবজি পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়াও তার ডান হাতের কয়েকটি আঙ্গুলও কেটে যায়। তাকে গুরুতর অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আহত মুকুল ও মনা’র শারীরিক অবস্থাও অনেক আশঙ্কাজনক।
অনুসন্ধানে জানা যায় গত ২ মাস ধরেই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিলো। হামলার মূল হোতা আজিজ তার কিশোর গ্যাং নিয়ে এলাকায় নাশকতা করতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার রাজশাহী মহানগরীর পুলিশ কমিশনার জনাব আনিসুর রহমান ও বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন কে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু, তারা অভিযুক্ত আজিজ বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ বা গ্রেফতার করেন নি। বরং তাদের কে আগে থেকেই অভিযোগের বিষয়ে জানিয়ে দিয়ে সতর্ক করা হতো বলে অভিযোগ উঠেছে। আজিজ ও তার গ্যাং বেশ কিছুদিন থেকেই বেপরোয়া হয়ে পরে। তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছিল। অনেকদিন থেকেই আহতদের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। আহতদের পরিবার এই বিষয়ে প্রায় দেড় মাস পূর্বে ২১ নং কাউন্সিলর নিজাম উল আজীম নিজাম কে অভিযোগ করে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেও কোনো ফলাফল পায় নি। অভিযোগ উঠেছে আজিজ বাহিনী ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা জোরেশোরে অংশগ্রহণ করে, মিটিং মিছিল করে। মূলত কাউন্সিলর নিজাম এর পরোক্ষ মদদে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকের সন্দেহ। আজিজ বাহিনীর বিরুদ্ধে পূর্বেই প্রশাসন ও ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতো না বলে এলাকাবাসী মনে করেন। অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা হলো
১। আজিজ ২। মজিদ( যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, কাউন্সিলর নিজাম তাকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেওয়ার পর সে আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে) উভয় পিতা মৃত সিরাজ শেখ ৩।রবিন পিতা: আব্দুর রব (২নং ব্যক্তির শ্যালক) (৩) পিপুল পিতা: মৃত পিন্টু। পিপুল বর্তমানে এই এলাকায় বাস না করলেও সে কিছু বহিরাগত যুবকদের নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে।
৪) ইয়াসিন পিতা শাহাদাত
৫) সজীব
৬/ পরশ সর্ব পিতা আজিজ
৭) সুইট পিতা মসজিদ
৮) নাঈম পিতা জুলু
১০) মুন্না আহমেদ বাদল পিতা মিলন
১১/ আমিন পিতা আকাই
১১/ সাইফুল পিতা
১২/ বাক্কার ওরফে (রফিক) উভয়ের পিতা মৃত আলি
সর্ব সাং খুলিপাড়া, থানা বোয়ালিয়া, রাজশাহী। দীর্ঘদিন ধরে আজিজ কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছে। তারই নেতৃত্বে দূধর্ষ কিশোর গ্যাং এলাকা দাপিয়ে বেড়ায়। সন্ত্রাসী আজিজ ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়ার্দী জানান, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয় নি। তবে আহত দের পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।