কুড়িগ্রামে চর রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি খাইরুল ইসলামের মাদক সেবনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় তাঁকে সংগঠন থেকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবে না তা জানাতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল ইসলামকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৭ জুন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি খাইরুল ইসলামের ‘ইয়াবা সেবনের’ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সভাপতি খায়রুল দাবি করেছেন, ‘ভিডিওর ব্যক্তি তিনি নন। তাঁকে ফাঁসানোর জন্য এটি তাঁর ভিডিও বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বদ্ধ ঘরে বিছানার ওপর বসে খাইরুল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মাদক সেবন করছেন।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ১৭ জুন এক পোস্টে দিয়ে জানানো হয়, ‘সাত বছর আগের কথা। আমাকে ডেকে নিয়ে গোপনে ভিডিও ধারণ করে ফাঁসানো হয়েছে। যে ভিডিও ধারণ করেছে সে বিভিন্ন সময় আমাকে এবং আমার পরিবারকে এটা নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করত। আমি মাদক সেবনকারী কি না তা প্রমাণ হয়ে যাবে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে। যদি প্রমাণ হয় আমি আমার জীবন দিয়ে এর প্রায়শ্চিত্ত করব। এ বিষয় নিয়ে মাতামাতি না করার জন্য অনুরোধ করছি।’
তবে কিছুক্ষণ পরই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পরবর্তীতে প্রোফাইলে গিয়ে পোস্টটি আর পাওয়া যায়নি। তবে ওই পোস্টও নিজের নয় বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত খায়রুল। তিনি বলেন, ‘আমি আমার আইডিতে এ ধরনের কোনো পোস্ট দেইনি। চক্রান্তকারীরা আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করে ফেক আইডি খুলে ওই পোস্ট দিয়েছিল।’
যদিও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যাচাই করে খাইরুলের এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
নিজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে খাইরুল বলেন, ‘আমি দোষ করে থাকলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু আমি কোনো দোষ না করলে কেন ব্যবস্থা নেবে?’
চর রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই সরকার বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এই ভিডিও আমি দেখেছি। আমি নিশ্চিত ভিডিওর ব্যক্তি ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল। আমরা জেলা কমিটিকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা ভিডিওটি দেখেছি। ভিডিওর ব্যক্তি খাইরুল ইসলাম বলে প্রাথমিক ভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। যদিও খাইরুল বলেছেন যে এটা ৪ / ৫ বছর আগের। তারপরও এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না। এ জন্য তাঁকে সংগঠনের দায়িত্ব থেকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবে না তা জানাতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ছাত্রলীগের কেউ মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জোর দিয়ে বলেন জেলা ছাত্রলীগের এই নেতা।