হিন্দুধর্মের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব হল জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব আজ মঙ্গলবার ২০ জুন শুরু যা আগামী ২৭ জুন উল্টো রথযাত্রার মধ্যে শেষ হবে। প্রতিবছর আষাড় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়ার রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়।দাদা বলরাম
বা বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রাকে নিয়ে মাসি গুন্ডিচার
বাড়ী যান জগন্নাথ দেব।
৪৬০ বছরের বেশি পুরনো রথযাত্রা উৎসব। ব্রহ্ম পুরাণ, পদ্ম পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ এবং কপিল সংহিতার মতো প্রাচীন শাস্ত্রে রথযাত্রার উল্লেখ রয়েছে। সুপ্রাচীন কাল থেকে চলে আসা এই ধর্মীয় ও সামাজিক উত্সব সম্পর্কে কয়েকটি চমকপ্রদ তথ্য।
শ্রীবিষ্ণুর। অন্যতম অবতার জগন্নাথ। অক্ষয় তিতীয়ার দিন থেকেই রথের নির্মাণ শুরু হয়ে যায়।রথ তৈরী করতে প্রায় ২ মাস সময় লাগে।প্রতিবছর
বসন্ত পঞ্চমীর দিনে দশপল্লার জঙ্গল থেকে কাঠ একত্রিত করা।
জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য প্রতি বছর নিম কাঠ দিয়ে তিনটি পৃথক রথ নির্মাণ করা হয়। ২০০-র বেশি সেবায়েত এই কাজে নিয়োজিত থাকে। রথ তৈরির সময় কোনও ধরনের পেরেক বা কাঁটার ব্যবহার করা হয় না। প্রতি বছরই আগের বছরের রথটি ভেঙে ফেলা হয়।
স্নানযাত্রার দিন ১০৮ কলসি জল ঢেলে জগন্নাথদেবকে স্নান করানো হয়। তারপরই সর্দি জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ১৪ দিন পৃথক একটি কক্ষে তিন ভাই-বোনকে আলাদা রাখা হয়। সুস্থ হয়ে উঠে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।
তিনটি রথের তিনটি আলাদা নাম আছে। জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ বা গরুঢ়ধ্বজ। তাঁর রথের রং লাল ও হলুদ। বলরামের রথ তালধ্বজ নামে পরিচিত। লাল ও সবুজ রঙের রথ বলরামের। সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন বা পদ্মরথ। কালো অথবা নীল ও লাল রঙের রথ হয় সুভদ্রার।
এর মধ্যে বলরামের রথ সবার আগে থাকে। মাঝখানে সুভদ্রা ও শেষে জগন্নাথের রথ থাকে। জগন্নাথের নন্দীঘোষের উচ্চতা ৪৫.৬ ফুট, বলরামের তালধ্বজ ৪৫ ফুট উঁচু এবং সুভদ্রার দর্পদলনের উচ্চতা ৪৪.৬ ফুট।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারের পুরীর রাজা সোনার ঝাঁটা দিয়ে পথ পরিস্কার করে না দেওয়া পর্যন্ত শয়ে শয়ে লোক মিলে টানলেও রথের চাকা একচুল এগোয় না। এই অনুষ্ঠানটি ছর পহনরা নামে পরিচিত।
আষাঢ় মাসের দশমীর দিনে গুন্ডিচা মন্দির থেকে উল্টো রথযাত্রা করে পুরীর মন্দিরে ফিরে আসেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।