যীশু সেন, বিশেষ প্রতিনিধি : আজ বরষার রূপ হেরি মানবের মাঝে, চলেছে গরজি, চলেছে নিবিড় সাজে। গত ১৬ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামস্থ নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সমাজ সমীক্ষা সংঘের আয়োজনে “বর্ষামঙ্গল” অনুষ্ঠানে গান, নৃত্য ও কবিতায় বর্ষাবরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বর্ষা বন্দনায় অতিথি কবি ও সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল জীর্ণ পুরানোকে পিছনে ফেলে নতুনের জয়গান গ্রহণের আহ্বান জানান। সংঘের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমাম বিলুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের নির্বাহী পরিচালক কল্লোল দাশ। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সংঘের নির্বাহী সভাপতি দেবাশীষ রায়, যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ মিনহাজ, বর্ষামঙ্গল প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মিটু কুমার শীল, সদস্য সচিব পার্থ প্রতিম বড়ুয়া প্রমুখ। উদ্বোধনী পর্বের শেষে সমাজ সমীক্ষা সংঘের বর্ষামঙ্গল উপলক্ষে প্রকাশিত সংকলন সমবীক্ষণ বর্ষামঙ্গল সংখ্যা উম্মোচন করেন কবি ও সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল এবং সমবীক্ষণ’র সহ সম্পাদক সৌরভ চৌধুরী। সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, জীর্ণ পুরানোকে পিছনে ফেলে নব কুড়ির মত জেগে উঠতে হবে। বর্ষা প্রেরণার ঋতু, বর্ষায় প্রকৃতি আমাদের ব্যর্থতার গ্লানি ভরা অতীত, হিংসা, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুনভাবে বাঁচার শিক্ষা দেয়। লোক সাহিত্যর আতুড়ঘর বর্ষা। নদীমাতৃক ও কৃষিপ্রধান এই দেশে বর্ষার অবসরে কৃষাণ-কৃষাণিরা রচনা করত বিভিন্ন লোক গল্প, গান, পুঁথি ইত্যাদি এবং এসব বর্ষামঙ্গল থেকে প্রেরণা নিতেন কস্টকর এবং শ্রমসাধ্য কৃষিকাজের। তিনি বলেন, সেই কৃষি প্রধান সংস্কৃতি থেকে সরে এসে আমরা আমাদের অতীত গেছি। আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনে আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের সমৃদ্ধ কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে। বর্ষা বরণের স্থান দখল করেছে বিভিন্ন কর্পোরেট দিবস। অতীত ভুলেছি ভুলে বলেই আজ প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন ঋতুভিত্তিক দিবস পালন ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত কিনা ? তিনি বলেন, এমন হওয়ার কথা ছিল না। এই দেশ, এই জাতিকে নিজ স্বত্বা, আত্ম পরিচয় এবং আগামীর সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে শিকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে। তিনি নতুনের জয়গানের বলিয়ান হওয়ার আহ্বান জানান। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী বিটু শীল ও পূরবী বড়ুয়া। তারা একে একে বর্ষার গান, প্রকৃতি বন্দনা, রবীন্দ্রনাথ, শচিন দেববর্মন, ডিএল রায়সহ পঞ্চ কবির গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে নৃত্য পরিবেশন করেন ওডিসি এন্ড টেগর ডান্স মুভমেন্টের শিল্পীবৃন্দ। দ্বৈত আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী ও মুজাহিদুল ইসলাম। কবিতায় বর্ষা আবাহন করেন আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী। এরপর বর্ষার গান গেয়ে শোনান শিল্পী মিঠুন ঘোষ ও গানের দল বন্দর।