পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ৯নং নাজিরপুর ইউনিয়নে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে গায়ের জোরে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় রাস্তা নির্মাণ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। বিবাদমান জমিতে রাস্তা নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা চালায় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই আহসান হাবিব মিন্টু। ০২.০৬.২৩ইং তারিখ রোজ শুক্রবার বেলা পৌনে নয়টার দিকে তাঁতেরকাঠী গ্রামে এঘটনা ঘটেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম মহসিন বলেন, ক্ষুদ্র বিষয়ে যদি সাংবাদিকরা আসেন তাহলে কাজ করবো কিভাবে?
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নাজিরপুর ইউনিয়নের তাঁতেরকাঠী গ্রামে নুর মোহাম্মাদ হাওলাদার গংয়ের সাথে একই গ্রামের জালাল খন্দকার গংদের জমি জমা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিরোধপূর্ণ ওই জমির ওপর দিয়ে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম মহসিন কাবিখা (কাজের বিনিময় খাদ্য) প্রকল্পের আওতায় তাঁতেরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে জালাল খন্দকার বাড়িমুখী মাটির রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। প্রকল্পের বিধিমতে নিদিষ্ট শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তড়িঘড়ি করে এক্সকাভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে কাজ করছেন। বিরোধীয় জমিতে রাস্তা নির্মাণে নুর মোহাম্মাদ ও তার ওয়ারিশগণ বাঁধা দিলে ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই ও ইউপি সদস্য মো. আহসান হাবিব মিন্টু দলবল নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে মো. ইদ্রিস হাওলাদার(৫৫), মমতাজ বেগম (৩৫) আকলিমা (২৫)সহ ৫/৭জনকে আহত করা হয়। এঘটনায় নুর মোহাম্মাদ বাদি হয়ে বাউফল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর পুনরায় কাজ শুরু করে চেয়ারম্যানের লোকজন। খবর পেয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় বার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন।
এবিষয়ে নুর মোহাম্বমাদ বলেন, ওই জমি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। জোড়জবরদস্তি করে জালাল খন্দকারেরা ভোগ করতে চায়। এনিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আদালত যে রায় দিবে আমরা তাই মেনে নিবো। কিন্তু চেয়ারম্যান জোর করে আমাদের জমির ওপর দিয়ে তার সমর্থকদের বাড়ির রাস্তা নির্মাণ শুরু করেন। এতে বাঁধা দিলে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম মহসিন বলেন,‘ ক্ষুদ্র বিষয়েও যদি সাংবাদিকরা আসেন তাহলে কাজ করবো কিভাবে? চেয়ারম্যান আরও বলেন,‘ রাস্তা নির্মাণ হোক, তারপর বসে বিষয়টি মিমাংশা করে দিব।’
এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন,‘ বিবাদমান জমিতে রাস্তা নির্মাণ করার সুযোগ নেই। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএ আরিচুল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।