চট্টগ্রামের হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আবু তৈয়ব এর বিরুদ্ধে খণ্ডকালীন শিক্ষক বাণিজ্য,আর্থিক অনিয়ম ও মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণসহ নানা অভিযোগে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ মে) রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মো. তালেব আলী।
গত ২৯মে সভাপতি স্বাক্ষরিত রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিকক্ষকে পাঠানো সাময়িক বহিষ্কার আদেশে বলা হয়, চট্রগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে গত ৮ মে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু তৈয়ব এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, আর্থিক অনিয়ম, বিধি-
বহির্ভূতভাবে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ ও খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগসহ নানাবিধ অভিযোগ করেছেন দুই শিক্ষক এবং এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
তবে এই তদস্ত কমিটি তদন্ত করতে আসলে তদন্ত কমিটির সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন এবং তদন্তকাজে বাধা প্রদান করেছেন। গত ২৩ মে একটি পাঠানো নোটিশ গ্রহণ করেননি।
বরখাস্তের আদেশ ৩০ মে থেকে কার্যকরের কথা উল্লেখ করা হয় ওই আদেশে।এদিকে গত ২৮ ও ২৯ মে বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন দুই শিক্ষক নিয়োগের সময় তাদের থেকে প্রধান শিক্ষক ঘুষ হিসেবে মোটা অংকের অর্থ আদায় করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে নিয়োগের সময় ওই দুই শিক্ষকের কাছ থেকে মোট ৩ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার সুবাধে তিনি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানান ওই স্কুলের শিক্ষকরা। তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়ে।
পরবর্তীতে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন প্রধান শিক্ষক আসার পর ঘুরে দাঁড়ায় ওই প্রতিষ্ঠানটি। আর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত আশা করেন ওই স্কুলের শিক্ষকরা।’
এদিকে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক বলেন, এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু তৈয়ব ২০০১ সালে যোগদান করেন। বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতির দায়ে তিনি দুইবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এবং চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড আপিল এন্ড আরবিট্রেশন কমিটির ২০০৫ সালের ৭ মে তারিখের ১৭তম সভার ১২নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে বরখান্ত হয়েছেন।
এই বরখাস্ত টা করেছিলেন জেলা প্রশাসক মহোদয় নেছার আহমদ রুমী। এখন এই বরখাস্ত হওয়ার পরে চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আপিল আবেদন বোর্ডে তিনি কোন অনুমোদন না নিয়ে এবং হাইকোর্টের ও কোন অনুমোদন না নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় তত্কালীন বিএনপির কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন চৌধুরীর যোগসাজশে এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকজন কমিটির সদস্য একত্রিত হয়ে থাকে সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় একটা চুক্তিনামা করে ।
যে চুক্তিনামার কোন গ্রহণযোগ্যতা নাই এবং কোন বৈধতা নাই বলে জানান তিনি।প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওই স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারির ২১ তারিখ থেকে আমি যোগদান করেছি। শুরুতে আমি চাকরিতে যোগদানের পর রেজোলেশন দিয়ে ছিলাম। এখানে দরখাস্ত করেছিলাম। কিছুদিন পর উনি আমার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিল।
এরপর প্রধান শিক্ষক আবার অফিসে ঢেকে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। ১৫ দিনের মধ্যে সে টাকা দিতে বলেন। যদি এসময়ে দিতে না পারি আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার হুমকি দেন। পরে বাধ্য হয়ে আমি বিদ্যালয়ের সভাপতি বরাবর লিখিত আবেদন করি।
প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু তৈয়ব কে বরখাস্তের বিষয়ে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মো. তালেব আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য ও আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়বকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগেও তিনি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের আপিল ও আরবিটেশন বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্ত ভাবে বহিস্কৃত ছিলেন।
তিনি দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বিদ্যালয়ে চাকরি করার সুবাধে এসব অনিয়ম দুর্নীতি করেন বলে জানান তিনি।
খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ ও আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আবু তৈয়ব কে ফোন দিলে তিনি মুঠো ফোনে তার বিরুদ্ধে অভিযান অস্বীকার করেন , প্রধান শিক্ষক মো. আবু তৈয়বের সাথে দেখা করতে চাইলে তিনি দেখা করার বিষয় টি এড়িয়ে যান।ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে সঠিক নয় সেটির প্রমাণ তিনি দিতে পারেন নি।
এছাড়া ও এবিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জেবুন নিছা খানম বলেন,তিনি ২০১৮ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন, এবং সে সময় থেকে তিনি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. আবু তৈয়ব এর দূর্নীতি অনিয়ম দেখে আসছেন, তিনি প্রতিবাদ করেছেন অনেক বার আর প্রতিবাদ করলেই শুনতে হতো গালি আর চাকরিচ্যুত এর কথা।
এছাড়া খারাপ আচরণের শিকার হয়েছেন কয়েক বার, এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বর্তমান স্কুল কমিটি আসার পর সঠিক নিয়ম তন্ত্র মেনে যে বরখাস্তের আদেশ টি দিয়েছে তা সঠিক তিনি আরো বলেন কোচিং বাণিজ্য ৩৮ লক্ষ্য টাকার অনিয়মের বিষয় টি সত্যি।