কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের বৈদ্যর বাজার ভাটি গ্রামের এক গৃহবধু শিপ্রা রায়কে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও অমানবিক নির্যাতন করে আসছেন। আসামি শুভ্র রায় কাজ্জীর তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহের করছে।
মামলার এজারহার সূত্রে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলার চাকিপশার ইউপির অর্জুন মিশ্র কার্জ্জী ভিলা । গ্রামের প্রভাষক অনাথ বন্ধু রায় কার্জ্জীর পুত্র শুভ্র রায় কার্জ্জীর সঙ্গে । ছিনাই ইউপির বৈদ্যর বাজার ভাটিগ্রামের মৃতঃ সুভাষ চন্দ্র রায় এর কন্যা শিপ্রা রায়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম চলে আসছিল।এরই সুবাদে শুভ্রর পরিবারের সম্মতিতে কোর্ট নোটারী পাবলিক ও হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ের সকল কার্যত্রুম সম্পন্ন হয়।বিয়ের পর তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজ এলাকার বাসা ভাড়া নিয়ে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটা ছিলেন।
হঠাৎ শুভ্র কার্জ্জীর বাবা-মা ও পরিবারের সবাই ঘুরতে এসে গৃহবধূকে তারা যৌতুক বাবদ বাবার বাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণ এনে দিতে বলে। গৃহবধূর পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় যৌতুক দেওয়া সম্ভব নয় জানালে তারা সকলে মিলে গৃহবধূর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালালেও তা সহ্য করে এবং এক পর্যায়ে পাশন্ড স্বামী শুভ্র ও তার পরিবারের সবাই মিলে লাঠি ও রট কিল ঘুসি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত যখম করে।এবং রক্তাক্ত যখম করা অবস্থায় জোরর্পূবক ভাবে ১০০ টাকার তিনটা সাদা স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নেয়।পরে গৃহবধূর কে ওই অবস্থায় রেখে তারা গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাটে পালিয়ে যায়।
পরে আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন গৃহবধূকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ শিপ্রা রায় বাদী হয়ে স্বামী শুভ্র রায় কার্জ্জী (২৮) কে প্রধান আসামী করে শশুর-শাশুরীসহ আরোও ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী অন্যান্যরা হলেন, সৌরভ রায় কার্জ্জী (২২), রত্না রাণী তমা (৩০), অনাথ বন্ধু রায় কার্জ্জীর(৫২), শোভা রাণী রায়(৪৫) নীহার রায় রঞ্জন সম্রাট(৩৩)।এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করা হয় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধারা ১১(গ), অন্যটি বিজ্ঞ এক্সকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ধারা ফৌ : কা :বি : আইনে ৯৮।
নির্যাতিত গৃহবধূ জানান, মামলা চলাকালীন অবস্থায় শুভ্রার পরিবার থেকে যৌতুকের ৫ লক্ষ টাকা ও মামলা তুলে নিতে প্রস্তাব দেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানালে অভিযুক্ত শুভ্র ও তার পরিবার ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধুমকি দিতে থাকে। যদি মামলা প্রত্যাহার না করে এবং যৌতুকের টাকা না দেয় তবে শুভ্রকে অন্য মেয়ের সাথে বিয়ে দিবেন।
অপরদিকে মামলা চলাকালীন অবস্থায় নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী শুভ্র রায় কার্জ্জী আদালতের রায়কে হেয় করে ও আদালত অবমাননা করে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই পীরগাছা থানার ইটা কুমারী ইউপির নরসিংহ গ্রামের বিশ্ব রায়ের কন্যা বেলী রাণী (ডলি)কে গত ৩ মে ২০২৩ইং রাতে গোপনে ২য় বিয়ে করে থাকেন।
নির্যাতিত গৃহবধূর শিপ্রা রায় নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ চিফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকা, স্বামী শুভ্র রায় কার্জ্জী (২৮) সহ মোট ৩ জনকে আসামী করে, বিজ্ঞ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসামী শুভ্র রায় জামির নাম মঞ্জুর করে তাহাকে জেলা হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
এবিষয় ভুক্তভোগী গৃহবধূ শিপ্রা রায় আরো বলেন, তাদের বিরুদ্ধ মামলা করাই অন্য আসামীরা এখন আমাকে সুযোগ বুঝে প্রাণে মারিয়ে ফেলার হুমকি ধুমকি দিচ্ছে।এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।