সাভারে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সের কিশোররা। নারীদের উত্ত্যক্তকরণ থেকে শুরু করে চুরি, ছিনতাই, মাদক বহন, মাদক ব্যবসা, অপহরণসহ এমনকি হত্যাকাণ্ডেও রয়েছে তাদের সম্পৃক্ততা। এলাকাভিত্তিক ছোট-বড় গ্যাং তৈরি করে দলগতভাবে এসব অপরাধ কর্ম করে বেড়াচ্ছে এসব সন্ত্রাসীরা।
এদের মধ্যে সাভার পৌরসভার ব্যাংক কলোনি এলাকার একটি কিশোরগ্যাং বাহিনী পুরো সাভার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের দলে রয়েছে প্রায় শতাধিক প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর সদস্য।
এছাড়াও সাভার উপজেলায় ৫০টির অধিক কিশোর অপরাধী গ্যাংসহ প্রায় তিন শতাধিক উচ্ছৃঙ্খল কিশোর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো সাভার আশুলিয়া অঞ্চল। এদের উৎপাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পুরো উপজেলার মানুষ। উঠতি বয়সের এসব মাস্তানদের পাশাপাশি সাভারে সন্ত্রাসী ও টপটেররদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব সন্ত্রাসীদের হাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র। উপজেলায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিপূর্বে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে পুলিশসহ বেশ কয়েকটি আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থা এসব মাস্তানদের তালিকা প্রস্তুত করে।
এরমধ্যে রয়েছে সাভার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মশিউর রহমান সম্রাটের অনুসারী সঞ্চয় ও নয়ন বাহিনী। সম্প্রতি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্যাতনের অভিযোগে আবারো আলোচনায় এসেছে তারা।
তাদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় করা অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ব্যাংক কলোনী এলাকার মডার্ন ক্যাডেট স্কুলের ছাত্রীদের বিভিন্ন সময় ইভটিজিং করে আসছিল সঞ্চয় ও নয়নসহ বাহিনীর সদস্যরা। এতে বাধা দেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পান্নু পারভেজ খান। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে ওই স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সঞ্চয় ও নয়নের নেতৃত্বে একদল কিশোর গ্যাং সদস্য তার গতিরোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে তারা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষক পান্না পারভেজ খানকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
অভিযোগের ব্যাপারে সাভার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মশিউর রহমান সম্রাট ফেইসবুকে লিখেন, ৫ নং ওয়ার্ডে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সুনির্দিষ্ট ভাবে আমাকে জানালে ইনশাআল্লাহ ব্যবস্থা নিব।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাভার পৌরসভার ব্যাংক কলোনি এলাকা এখন কিশোর গ্যাংয়ের দখলে। এখান থেকে তারা পুরো সাভার উপজেলার পাড়া মহল্লা গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এদের সেল্টার দিচ্ছেন স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। এসব অপরাধ রোধে প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত কিশোরগ্যাং মুক্ত পরিবেশ চায় স্থানীয়রা। পাশাপাশি কিশোর গ্যাংয়ের মদতদাতাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা পিপিএম বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।