মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
ঢাকার সাভারে ইজারা ছাড়াই বিরুলিয়া-আক্রাইন সড়কে টোল আদায় বন্ধ হতে দিচ্ছে না সাভার পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল মণ্ডল।
জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিধারছে আদায় করছে চাঁদা।
সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় চার কিলোমিটার সড়কটিতে অন্তত ৭০০-৮০০ অটোরিকশা চলাচল করে। এসব একেকটি রিকশা থেকে দিনপ্রতি ১০ টাকা করে তোলা হয়। টাকা তোলার জন্য দুই স্টপেজে ৪ জন কর্মী কাজ করে। তারা টাকা নিয়ে মার্কার কলম দিয়ে অটোরিকশা চিহ্নিত করে দেয়। এছাড়া সড়কের ওপরে থাকা হালিম, চটপটি ও চায়ের টং থেকে দিনপ্রতি দোকান ভেদে নেওয়া হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে।
টাকা তোলার কারণ জানতে চাইলে চাঁদা উত্তলনকারীরা জানায়, ছাত্রলীগের সাভার পৌরসভা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল মণ্ডলের নির্দেশে তারা অর্থ উত্তোলন করছে।
অভিযোগ আছে, সড়কে চলন্ত ট্রাক, মিনি ট্রাক থেকেও একইভাবে অর্থ আদায় করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি এমন একটি চলন্ত ট্রাক থামিয়ে চাঁদা আদায়কালে সেখানে দুর্ঘটনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে চাঁদা উত্তোলনকারীরা স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়েন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তারা চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করে।
অটোরিকশার একাধিক চালক এ চাঁদা দেওয়ার কথা জানান। তবে তারা কি কারণে চাঁদা দিচ্ছেন তা জানেন না। এমনকি চাঁদা দিয়ে কোনো রসিদও পাননি বলে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘আগে তো চাঁদা নিত না। এখন নিতেছে। টাকা না দিলে সমস্যা করবো। তাই দিতাছি।’
সড়ক-মহাসড়কে চাঁদা আদায় নিষিদ্ধ
এদিকে সড়কটিতে এ টোল আদায় অবৈধ বলে জানা গেছে। গত ৩০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক সাক্ষরিত এক নির্দেশে বলা হয়, টার্মিনাল ছাড়া অন্য সকল সড়ক মহাসড়কে চাঁদা/টোল আদায় অবৈধ।
এটি বন্ধে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া গত ৩১ জানুয়ারি সাভার পৌরসভার যে ইজারা তালিকা দেওয়া হয়েছে সেখানেও সড়ক/মহাসড়কে চাঁদা/টোল আদায় করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়।
৮ ফেব্রুয়ারি সাভার পৌরসভার মেয়রের আরেক নির্দেশনায় বলা হয়, পৌরসভা থেকে সড়ক, মহাসড়কে কোনো ইজারা দেওয়া হয় না ও চাঁদা আদায় করা হয় না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাভার পৌরসভা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল মণ্ডল বলেন, তারা আব্দুল আলীম সোহাগ (সুলতান) এর পক্ষ হয়ে টাকা উত্তোলন করছেন। সুলতান পৌরসভা থেকে কুলিস্ট্যান্ডের নামে দরপত্র পেয়েছিলেন। তার কাছ থেকেই সড়কের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান রুবেল। বিষয়টি নিয়ে জানতে সোহাগের ব্যক্তিগত নম্বরে কল দেওয়া হয় ও ম্যাসেজ পাঠানো হয়। তবে তিনি কোনোটিরই সাড়া দেননি।
সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গনি বলেন, ‘যদি নেয় তাহলে পুলিশে দিয়া দেন, আমাদের চিঠি টা দেইখা জান চিঠির মধ্যে পরিস্কার লেখা আছে কোনো লেনে কোনো সড়কে কোনো জাগায় চাদা উঠানো নিষেধ যদি কেও তুলে ওই বেটারে থানায় নিয়া দেন।’
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এটা জানা নেই, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। আপনি থানা পুলিশকে বিষয়টি জানাতে পারেন। আমাদের টহল পুলিশ থাকে তারা যদি হাতেনাতে ধরতে পারে আমরা ব্যবস্থা নিবো।’