কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় ৩ নারীসহ ৭ জন আহত হয়েছে।
গত কাল সোমবার (১ মে) দুপুরে উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামে ও রামদী ইউনিয়নের বড়চর গ্রামে পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় আহত হন তারা।
উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামের মৃত মনির উদ্দিন সরকারের মেয়ে শামসুন্নাহার লিপি (৫৮) ও জসিম উদ্দিন সরকারের স্ত্রী রিতা বেগম (৩০) কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ২৮ বছর ধরে একই এলাকার মৃত বিরু শেখের পুত্র মোস্তফা হোসেন ওরুফে আলফু (৪৫), মৃত কাবিল মিয়ার পুত্র আহম্মদ হোসেন (৫৫) ও আক্তার হোসেনের পুত্র মো. ইয়াসিন (২০) গংদের সাথে তাদের জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এসব বিরোধ নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে একাধিক মামলা মোকাদ্দমা চলমান। উক্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রায় সময় তাদের বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো।
গত ১ মে সোমবার দুপুরে শামসুন্নাহার লিপি ও রিতা বেগম উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামে তাদের পুরাতন বাড়িতে লিচু গাছে লিচু দেখতে যান। এসময় প্রতিপক্ষের মস্তোফা হোসেন ওরুফে আলফু (৪৫), আহম্মদ হোসেন (৫৮), ইসমাইল হোসেন (২৭), মো. ইয়াছিন (২০), মোছা. সালেহা বেগম (২৮), মোছা. আছিয়া খাতুন (৪৫) ও বেদেনা আক্তার (২৩) দেশীয় অস্ত্রাদী নিয়ে অনাধিকার ভাবে শামসুন্নাহার লিপির পুরাতন বাড়িতে গিয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে শামসুন্নাহার লিপি ও রিতা বেগমকে নির্মম ভাবে মারধোর করে রক্তাক্ত জখম করে। এতেও তার ক্ষ্যান্ত হয়নি হামলাকারীরা দড়িগাঁও মোড়ে রাস্তার উপর গিয়ে শামসুন্নাহার লিপি ও রিতা বেগমের উপর পুনরায় হামলা করে মারধোর করে। খবর পেয়ে হামলাকারীদের হাত থেকে ওদের বাঁচাতে গেলে মো. জসিম উদ্দিন সরকার লিটন (৩৫) ও মোছা. কিছমত আরা বকুল (৫৫)কেও মারধোর করে তারা। পরে স্থানীয়রা শামসুন্নাহার লিপি ও রিতা বেগমকে রক্তাক্ত গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
গুরুতর আহত শামসুন্নাহার লিপি হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে ও মৃত্যু সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বাকী দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
এঘটনায় ওইদিন বিকালে শামসুন্নাহার লিপির বড় ভাই মো. আমজাদ হোসেন সরকার (৫২) বাদী হয়ে ৭ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এব্যাপারে প্রতি পক্ষের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে খুঁজে না পাওয়ার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অপর দিকে উপজেলার রামদী ইউনিয়নের বড়চর গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে মো. কামাল মিয়া (৩২) কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিযোগ করে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার চাচা করিম মিয়া (৫৫), চাচাতো ভাই আরাফাত (২৬) ও আসিফ (২২) এবং তৌহিদ মিয়াসহ ৪/৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রাদী নিয়ে কামাল মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করিয়া তাদের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। হামলায় কামাল মিয়া (৩২) সহ তার বাবা আসাদ মিয়া (৬৫) ও চাচা মস্তোফা ওরুফে সফু মিয়া (৭০) গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে হামলাকারীদের হাত থেকে এদের উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক মস্তোফা ও আসাদ মিয়াকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরন করেন।
এ ঘটনায় মো. কামাল মিয়া বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এব্যাপারে প্রতি পক্ষের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে খুঁজে না পাওয়ার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পৃথক দুটি ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।