ভারী হয়ে গেছে বঙ্গবাজারে অসহায়াদের কান্নায় ভারী হয়ে গেছে রাজধানী ঢাকা শহর।
স্বপ্ন পোড়ার গন্ধ নাকে নিয়ে আর্তনাদ করে যাচ্ছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা।
স্বপ্ন পোড়ার গন্ধ নাকে নিয়ে আর্তনাদ করে যাচ্ছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা।
এ যেন দেখার মত কোনো দৃশ্য নয়। পাথরের মত শক্ত হৃদয়ও এমন দৃশ্যের কাছে হার মেনে যাবে। সব হারানো বৃদ্ধ বাবার আকাশ ফাটা আর্তনাদ আর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর চিৎকারই জানান দিচ্ছে আমরাতো বেঁচে থেকেও মরে গেছি।
রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে লাগা আগুনে পুড়ে গেছে শত শত দোকান। ঈদ সামনে রেখে এসব দোকানে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের মজুত ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একাধিক ইউনিট। আগুন লাগার খবরে বঙ্গমার্কেটের দোকানিরা ছুটছে দিকবেদিগ হয়ে। জীবন বাজি রেখে শেষ সম্বল রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। আগুন থেকে রক্ষায় ছিটানো পানিতে ভিজে যাওয়া পণ্য সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই। শতশত ব্যবসায়ী প্রাণপণে চেষ্টা করছেন যদি কিছু মালামাল সরিয়ে নেওয়া যায়। এক দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। অপর দিকে ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিতে চাইছেন।
আগুনের ভয়াবহতা এতই ছিল যে হিমশিম খেতে হয়েছে দমকল বাহিনীকেও। এরই মধ্যে উৎসুক জনতার ভিড়ে আরও বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার ফাইটারদের। উৎসুক জনতার কেউ কেউ সাহায্য করলেও বেশিরভাগ মানুষই ছিলেন মোবাইল ফোনে ভিডিও করায় ব্যস্ত। বঙ্গবাজারের অসংখ্য দোকানিদের অঝোরে কান্না করতে দেখা গিয়েছে। শেষ সম্বল পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়ায় বুকফাঁটা আর্তনাদ করছেন তারা। এ যেন দেখার মত কোনো দৃশ্য নয়। পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কেনাবেচার সবচেয়ে ভালো সময় এখন। ঠিক সেই সময়ে ভয়াবহ আগুনে স্বপ্ন পুড়ে যাওয়ায় বঙ্গবাজারে বয়ে যাচ্ছে শোকের মাতম।
ঈদ সামনে রেখে কেউ লাখ টাকা, কেউবা কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু আগুনের মুখ থেকে কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলেন, সব হারিয়ে এখন তারা কী করবেন বুঝতে পারছেন না। ভয়াবহ এই আগুনে ঈদের জন্য আনা শত শত দোকানের মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। সব হারিয়ে দিশেহারা এখানকার ব্যবসায়ীরা। কোনোক্রমেই থামছে না তাদের কান্না।
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে যখন আগুন লাগে, তখন আশপাশের বিপণিবিতানের দোকানমালিকেরা মালামাল বের করে রাস্তায় রাখা শুরু করেন। সেই মালামালের কিছু অংশ যেমন পুড়েছে, তেমনি কিছু চুরিও হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বঙ্গবাজার ও আশপাশের বিপণিবিতানগুলোর দোকানে কত মানুষ কাজ করতেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, সংখ্যাটি ১৫ হাজারের কম হবে না।
দোকানকর্মীরা বলছেন, ঈদের আগে ভালো কেনাবেচার পর বেতন ও উৎসব ভাতা পাবেন, দোকান থেকে পরিবারের সদস্যদের পোশাক পাবেন, নিজেরা কেনাকাটা করবেন এই আশা ছিল তাঁদের। হঠাৎ আগুনে পরিবারসহ জীবিকাই অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল।