মুভিলর্ড খ্যাত মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ঘরে আবার ঢুকলেন পরিচালক এফ আই মানিক। প্রায় এক দশক পর মানিককে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। মানিককে নিয়ে নতুন ধারার সিনেমা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। মনতাজুর রহমান আকবরকে নিয়ে পরপর সাতটি সিনেমা নির্মাণ করে মানিককে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েছেন। ২০০৬ সালের দিকে চলচ্চিত্রের চরম অশ্লীলতার সময় ডিপজল মানিককে দিয়ে নির্মাণ করেন ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমাটি। বলা যায়, এই একটি সিনেমা দিয়েই অশ্লীলতায় আচ্ছন্ন থাকা চলচ্চিত্রের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন ডিপজল। সিনেমাটি সুপার-ডুপার হিট হওয়ায় সুস্থ ধারার নির্মাতারা সিনেমা নির্মাণে আগ্রহী হয়ে উঠেন। সে সময় এই এক সিনেমায় থেমে থাকেননি ডিপজল। এফ আই মানিককে দিয়ে একের পর এক দর্শক চাহিদা মতো সিনেমা নির্মাণ করতে থাকেন। কোটি টাকার কাবিনের পর চাচ্চু, মায়ের হাতে বেহেশতের চাবিসহ পরপর ছয়টি সিনেমা নির্মাণ করেন। চাচ্চু সিনেমাটি ছিল বাম্পার হিট। এসব সিনেমা ব্যপক ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করায় তখন চলচ্চিত্র অশ্লীলতা থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। ডিপজলের গল্পে এফ আই মানিকের কুশলী নির্মাণে চলচ্চিত্রে প্রাণ ফিরে আসে। বলা হয়ে থাকে, ডিপজল অশ্লীলতা থেকে চলচ্চিত্রকে টেনে তোলেন। তিনি নিজে যেমন সিনেমাগুলোতে অভিনয় করেন, তেমনি নতুন শিল্পীদেরও সুযোগ করে দেন। সে সময় কোটি টাকার কাবিন সিনেমায় শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে সুযোগ দিয়ে তাদের ক্যারিয়ারের ভিত্তি গড়ে দেন। মানিককে নিয়ে ডিপজলের এই উদ্যোগ চলচ্চিত্রের একটি নতুন ধারা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ডিপজল সিনেমার নির্মাণ ও গল্পে ভিন্নতা আনার জন্য মনতাজুর রহমান আকবরকে দিয়ে নতুন মিশন শুরু করেন। করোনার সময়ে আকবরকে নিয়ে প্রতি মাসে একটি সিনেমা করে বছরে এক ডজন সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ নেন। করোনায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটায় এক ডজনের মধ্যে সাতটি সিনেমা নির্মিত হয়। এর মধ্যে দুটি সিনেমা মুক্তি পায়। বাকি সিনেমাগুলো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলার হারকিউলিস, মানুষ হলো অমানুষ, ছোট্ট সংসার ইত্যাদি। মানিককে নিয়ে পুনরায় সিনেমা নির্মাণ প্রসঙ্গে ডিপজল বলেন, মানিক আমার ঘরের পরিচালক। তিনি আমার চিন্তা-ভাবনা ধরতে ও বুঝতে পারেন। আমি যা চাই তা করতে পারেন। এতদিন আকবরকে দিয়ে এক ধরনের সিনেমা বানিয়েছি। এখন দর্শককে আরও বেশি বৈচিত্র দেয়ার জন্য মানিককে নিয়েছি। আমার পরবর্তী ছয়-সাতটি সিনেমা নির্মাণের দায়িত্ব তাকে দিয়েছি। প্রথমে তিনটির কাজ হবে। এগুলোর গল্প রেডি আছে। আশা করছি, আগামী মাসের শুরুর দিকে মানিককে নিয়ে নতুন সিনেমার কাজ শুরু করতে পারব। ডিপজল বলেন, ইতোমধ্যে যে সিনেমাগুলো সেন্সর হয়েছে, সেগুলো মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী রোজার ঈদে একটি এবং কোরবানির ঈদে একটি মুক্তি দেয়া হবে। এই দুই ঈদের মাঝে আরেকটি মুক্তি দেব। অন্যদিকে, মানিককে নিয়ে নতুনগুলোর কাজ চলতে থাকবে। মানিকের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে, তিনি আমার গল্প বুঝে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে সঠিকভাবে তা পর্দায় তুলে ধরতে পারেন। তাকে নিয়ে নির্মিত অতীতের সিনেমাগুলো সুপার হিট হওয়ার মূল কারণ কিন্তু গল্পকে দর্শকের মনমতো পর্দায় তুলে ধরতে পারা। তাছাড়া, মানিক সময়মতো সিনেমার কাজ শেষ করতে পারেন। এতে শিডিউল সমস্যা হয় না। ডিপজল বলেন, নতুন সিনেমায় দর্শক আমাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দেখতে পাবেন। এক সময় রাজ্জাক, ফারুক, জসিম ভাইয়েরা যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করব। এখন নায়ক হওয়া নয়, চরিত্রের গুরুত্ব অনুযায়ী অভিনয় করব। নায়ক-নায়িকা থাকবে অন্যরা। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এফ আই মানিককে তিন সিনেমার গল্প বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি এগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি, তাকে নিয়ে ভাল কিছু হবে। দর্শক ভাল সিনেমা পাবে।