লাকসামে পিত্রালয়ের অদূরে রাস্তার পাশে জঙ্গল থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টায় নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজের পশ্চিম পাশে মিয়া পুষ্করিনি এলাকায়।
ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাতে জমেলা আক্তার বৃষ্টি (১৬) নামে ওই তরুণীর লাশ দাফন করা হয়।
সে কলেজপাড়া এলাকার রিকশা চালক জামাল হোসেনের মেয়ে।
ওই তরুণীর স্বজনরা জানায়, ৭/৮ মাস আগে মোবাইল কলের সূত্র ধরে নোয়াখালীর সুবর্ণ চরের আলাউদ্দিন সোহেল ওরফে টিকটক সোহেলের সাথে পরিচয় হয় বৃষ্টির।
এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ৫ মাস আগে তারা বিয়ে করে। এরপর তারা চাটখিল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল মুঠোফোনে বৃষ্টির পরিবারকে জানায়, বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে। এ সময় পরিবারের লোকজন বৃষ্টিকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলে। তখন সোহেল জানায়, লাকসামে লাশ নিয়ে আসতে রাত তিনটা বাজবে। এদিকে, পরিবারের লোকজন অপেক্ষা করতে থাকে।
রাত একটার পর ওই গ্রামে দ্রুত গতিতে একটি সিএনজি অটোরিকশা প্রবেশ করে মিয়া পুষ্করিনি গলিতে ঢুকে পড়ে। একটু পরেই সিএনজি অটোরিকশাটি দ্রুত ফিরে যাওয়ার দৃশ্য দেখে রাস্তায় থাকা দুটি ছেলে বৃষ্টির পরিবারকে জানায়। ইত্যবসরে সোহেল মুঠোফোনে জানায়- লাশ ফেলে রেখে গেছে, খুঁজে নেয়ার জন্য। এ সময় পরিবারের সদস্যরাসহ গ্রামের লোকজন লাশ খুঁজতে থাকে। অন্যদিকে, তাৎক্ষণিক কয়েকজন মোটর সাইকেল নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাটি ধাওয়া করে।
একাধিকবার মোটর সাইকেল আরোহীদের চাপা দেয়ারও চেষ্টা করে সিএনজি। অবশেষে ছিলোনিয়া রাস্তার মাথায় সিএনজি অটোরিকশাসহ দুজনকে আটক করা হয়।
এদিকে, খোঁজাখুঁজির পর মিয়া পুষ্করিনি এলাকায় রাস্তার পাশে জঙ্গলে বৃষ্টির লাশ খুঁজে পায় পরিবারের লোকজন।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে লাকসাম থানার উপপরিদর্শক মোঃ আশরাফুল আলম লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
উপপরিদর্শক আশরাফুল আলম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে হত্যা না আত্মহত্যা কোনটি বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি চাটখিল এলাকায় হওয়ায় আটককৃত ২ জন ও তাদের বহনকারী গাড়ি এবং বাদীপক্ষকে বেগমগঞ্জ থানায় পাঠানো হয়েছে। ঐ থানা পুলিশ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।