নতুন ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তি সম্পর্কে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ‘উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাব ‘ শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও শিকক্ষদের নিয়ে কাজ করছে.. যেটি হবে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ ” চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভবিষ্যৎ নেতা তৈরি করার জন্য একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান।
গত ৩ জানুয়ারি, মঙ্গলবার উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও হবিগঞ্জ জেলা শহরে অসহায় ও হতদরিদ্র এবং শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ক্লাবের ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এতে ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাবের উপদেষ্টামন্ডলী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা বার্তায় দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান,বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে মানসম্পন্ন ও সময়োপযোগী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং গবেষণার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তিই পারে সব প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সভ্যতাকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে এবং চিন্তাভাবনা ও গবেষণা নিয়ে উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাবের সকল উদ্ভাবকদের উপদেশমূলক অনেক কথা বলেন।
উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাব ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক জনাব মোহাম্মদ মোশাহিদ মজুমদার বলেন –
“একটি রাষ্ট্রের সম্প্রসারণশীল বিকাশ নির্ভর করে রাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ভাবনী শক্তির ওপর। কারণ উদ্ভাবনী শক্তি ব্যক্তিসত্ত্বার মাধ্যমে সামগ্রিক সত্ত্বাকে প্রভাবিত করে। ফলে এক সময় সেটি রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত হয়। এই উদ্ভাবনী শক্তির ভিত্তি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশেষায়িত মানুষ পর্যন্ত হতে পারে। যেমন রাষ্ট্রের যে সমস্যাগুলো বিদ্যমান আছে তা নিয়ে মানুষ যাতে ভাবতে পারে এ ধরনের পরিবেশ কেবল উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তির ক্ষেত্র তৈরি করার মাধ্যমে সম্ভব। তরুণ প্রজন্ম আগামীর নেতৃত্ব দেবে। তাদের বুদ্ধিমত্তা ও আইডিয়া দেশকে সমৃদ্ধ করবে। আমাদের নতুন পথ দেখাবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে।নতুন আইডিয়া ছাড়া কোনো দেশ এগোতে পারে না। তাই শিক্ষা, কৃষি, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক ও দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে তরুণদের নতুন নতুন আইডিয়া বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করতে সরকার কাজ করছে। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে। আর আমি মনে করি হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার উন্নয়ন মূলক প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবনী বিজ্ঞান ক্লাব হবিগঞ্জ জেলা সহ সারা বাংলাদেশ কে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাবে আমি এই দোয়াই করি।”
সভাপতি – মোবাশির আলম চৌধুরী বলেন-
“বর্তমানে যারা প্রাথমিক – মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে ২০৪১ সালে তারাই বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন খাতে নেতৃত্ব দিবে। আজকের শিশু প্রজন্মকে আমরা যেভাবে গড়ে তুলবো, ২০৪১ সালে জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশ সেভাবেই গড়ে উঠবে। আমরা অনুকরণ করে নয়, উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বড় করতে চাই।”
সহ সভাপতি জনাব মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন
“আমরা চাইছি বাংলাদেশে নতুন নতুন চিন্তা করার সংস্কৃতি তৈরি হোক। নতুন নতুন উদ্ভাবন বের হয়ে আসুক। কেননা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও কাজের সমন্বয় হলেই কেবল যেকোনো কাজের সফলতা আসে।
আমাদের মূল পরিকল্পনা হলো সারা বাংলাদেশে তরুণদের মাঝে উদ্ভাবনী চিন্তার বার্তা ছড়িয়ে দেয়া। প্রতিটি ভালো কাজের পেছনে ইনোভেশন জড়িত। আমাদের তরুণদের একটা ইনোভেশন যদি ক্লিক করে তবে আমাদের দেশ হয়তো সেটাতেই সুনাম অর্জন করতে পারে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মনিরুল জামান বলেন:আমরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইনোভেশন কালচার ছড়িয়ে দিতে পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে এখন যে তরুণরা কাজ করছে তারাই পরবর্তী সময়ে মেন্টর হচ্ছে। এই মেন্টররা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তরুণদের উদ্ভাবনী আইডিয়া জাগ্রত করতে কাজ করবে। বিজ্ঞানী হিসেবে গড়ে উঠবেই ইনশাআল্লাহ।”
ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ আলম চৌধুরীসহ কার্যকরী সদস্যরা আরও বলেন-
“উন্নয়নের মূলে রয়েছে মানুষ। তাই পল্লী উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন, শিল্প উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হবে মানুষকেই এবং উন্নয়ন ঘটাবে মানুষ। অতএব দেশে যত রকমের বস্তুসম্পদ এবং সম্ভাবনা থাকুক না কেন যতক্ষণ মানুষ এ সম্পদ আহরণ এবং ব্যবহার উপযােগী করতে না পারবে ততক্ষণ আমরা এ সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবাে। তাই দেশের জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
ক্লাবের উপদেষ্টা ও কার্যকরীসদস্যদের পক্ষ থেকে সকলকে ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানানো হয়।