রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরছবি: সাজিদ হোসেন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ করতে তাঁরা নয়াপল্টনে যাবেন।
এটা তাঁদের ঘোষিত কর্মসূচি। কিন্তু সরকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারের একটা পরিকল্পিত প্লট তৈরি করে ১০ ডিসেম্বরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে নস্যাৎ করতে চাইছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে সমাবেশ, সেটা আমরা অনুষ্ঠান করব। আমরা চেয়েছিলাম নয়াপল্টনে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। এখন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এ সমাবেশকে শান্তিপূর্ণ কীভাবে করবে। নিশ্চয়ই আমরা আমাদের সমাবেশস্থলে যাব। আর জনগণ কী করবে, সেটা জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’
নয়াপল্টনেই করবেন কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নয়াপল্টনের কথাই বলেছি। সরকারের কাছে আমরা এটাও বলেছি, যদি আপনাদের বিকল্প কোনো প্রস্তাব থাকে এবং সেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তা আমরা বিবেচনা করব।’
নয়াপল্টনে পুলিশের সতর্ক পাহারা, মিছিল ছাত্রলীগের
নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে সরকারদলীয় নেতা–কর্মীদের মিছিল
সোহরাওয়ার্দীতে সমস্যা অনেক
এক সাংবাদিক জানতে চান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ করতে সমস্যাটা কোথায়? জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সমস্যা অনেক। এক নম্বর সমস্যা হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এখন বড় সমাবেশ করার সুযোগই নেই। সেখানে এত বেশি স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে যে সেটা বড় সমাবেশের জন্য একেবারেই উপযোগী নয়। এর মাত্র একটা গেট। দুই নম্বর হলো ওখানে চারদিক দেয়ালঘেরা। বড় মিটিংয়ে যদি কোনো রকমের একটা গোলযোগ সৃষ্টি হয়, চাপাচাপিতে অনেক লোকের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আবার ওখানে আওয়ামী লীগের পরপর মিটিং হওয়ায় বিশাল স্টেজের স্ট্রাকচার করা আছে। আরেকটা বড় অভিযোগ হচ্ছে, আমরা চিঠি দেওয়ার পর আমাদের সঙ্গে ন্যূনতম আলোচনা না করেই পরের দিনই আমাদের বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। এখানেই মনে হয়েছে, তাদের পুরোপুরি চক্রান্তমূলক ঘটনা আছে। যে কারণে তারা সেখানে দিয়েছে।’
বিএনপির সমাবেশের স্থান পুলিশ অথবা সরকার কেন নির্ধারণ করবে
এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা তো ১২ অক্টোবর থেকে নয়টি স্থানে কর্মসূচি করেছি। গত এক মাস যাবৎ আওয়ামী লীগও অনেক সমাবেশ করেছে। আমার একটি ছোট্ট প্রশ্ন আপনাদের কাছে, আওয়ামী লীগ যে সমাবেশগুলো করেছে, তার স্থান কে নির্ধারণ করেছে? সেটা আওয়ামী লীগ করেছে, নাকি বিএনপি করেছে, নাকি পুলিশ নির্ধারণ করেছে? আওয়ামী লীগের সমাবেশের স্থান আওয়ামী লীগই নির্ধারণ করেছে। তাহলে বিএনপির সমাবেশের স্থান পুলিশ অথবা সরকার কেন নির্ধারণ করবে?’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে ডেকেছিলেন ডিএমপি কমিশনার
সমাবেশের স্থান নির্ধারণের বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে (এ্যানি)। গতকাল বুধবার নয়াপল্টন থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে ডিএমপি কার্যালয়ে ডাকেন। তাঁরা বিকল্প স্থানের বিষয়ে যে কথা বলেছিলেন, সে বিষয়ে আলাপ করে চিঠি নিয়ে আসার জন্য বলেন। আমার নিজের সঙ্গেও ডিএমপি কমিশনারের কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, “এ্যানি সাহেবকে পাঠান, আমরা চিঠি দিয়ে দিচ্ছি।” তিনি নিজে এ্যানিকে ফোন করেছেন, “আপনি আসেন, চিঠি নিয়ে যান।” এ্যানি যখন বেরোতে যাবেন, সেই মুহূর্তে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।