চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলাধীন ৫নং (পঃ) সহদেবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম কাঠালিয়া।
এই গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মাধব সরকার, বয়স এখন ভাটির দিকে ৫৮ পেরোলো, কিন্ত তাকে দেখে এখনো মনে হয় তরুন। সেই শৈশব কাল থেকে দেখে আসা যাতায়াতের কষ্ট যেন শেষ হয়নি আজও।
শেষ বয়সে এসেও অধুনিক যুগে এমন দুর্বিষহ কষ্ট কাঠালিয়া গ্রামের মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী। আক্ষেপ করে এমনটাই বলছিলেন,কাঠালিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা মাধব সরকার।
স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা জোটেনি এই গ্রামের মানুষের।
কচুয়া ও মতলব দক্ষিনের সীমান্তবর্তী এ কাঠালিয়া গ্রামটি। এ গ্রামে প্রায় ১ হাজার ২শত জনসংখ্যা এর মধ্যে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩শ জন। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যজীবী ও কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামটিতে যাতায়াতের জন্য কোন রাস্তা না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে।
বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে ও রোগীদের যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয়। গ্রামাবাসীরা বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে নৌকায় আবার কখনো হাঁটু বা কোমর পানিতে এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে ইরি ক্ষেতের কর্দমাক্ত আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীরা দৈনিক বাংলার অধিকার বলেন, আমাদের গ্রামে যাতায়াতের জন্য কোন রাস্তা না থাকার কারনে সময়মতো স্কুল -কলেজে যেতে পারছি না। এতে করে পড়ালেখায় আমরা অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে পারাপাড় হতে হয়। দ্রুত রাস্তাটি নির্মানের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, আমাদের গ্রামটি একটি সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় আমরা আজ অবহেলিত। দুই উপজেলা মধ্য দিয়ে রাস্তাটি যাওয়ার ফলে, রাস্তাটি না হওয়ার লক্ষে দক্ষিন মতলব বাসীর একটি পক্ষ বিজ্ঞ আদালতে মামলা করলে রাস্তা নির্মাণ কাজ থমকে যায়। আধুনিক যুগে ও একরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদের নাম কাঠালিয়া গ্রাম। অনেকেই জনপ্রতিনিধি হয়ে আসে কিন্তু আমাদের দু:খ ও জনদুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান শিশির বলেন, উপজেলা চেয়াারম্যান নির্বাচিত হওযার পরে আমি দু’বার কাঠালিয়া গ্রাম পরিদর্শন করি।
রাস্তা না থাকায় আমি ও আমার সাথের লোকজন ওই গ্রামে যেতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাতে গ্রামবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্য আমার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ৪টি সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। কাঠলিয়া গ্রামের মানুষ অনেক কষ্টে যাতায়াত করে এবং দুর্ভোগ নিরসনের জন্য আমরা জোড়ালো চেষ্ট করছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, অনেক বছর ধরে ওই গ্রামে রাস্তা নেই। কিছুদিন পূর্বে আমি ওই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে যাতায়াতের রাস্তা পরিদর্শন করি। কিন্তু যে স্থানে রাস্তা নির্মান করা হবে দু’পাশে কৃষকের মালিকানা জমি থাকায় এবং মামলা থাকায় রাস্তা নির্মানে সমস্যা হচ্ছে। তবে মতলব ও কচুয়া জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে দ্রুত নতুন রাস্তা নির্মানের চেষ্টা চলছে।