সেপাল নাথ, ছাগলনাইয়া (ফেনী) প্রতিনিধিঃ
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেখা মেলেনি সুখের ছোঁয়া। পাননি কোন সরকারি বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতাও। সম্প্রতি ঘর না পাওয়া হতাশা ও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউপির মাটিয়াগোধা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী ষাটোর্ধ পারুল বেগম।
সরকারীভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘর বরাদ্দ থাকলেও পায়নি কোন ঘর। দীঘির পাড়ে ছোট্ট একটি খুবরীর মধ্যে চার বোন এবং দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে কেটে যাচ্ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে মজিবুল হক’র দিন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মহামায়া ইউপির মাটিয়াগোধা গ্রামে চাঁদগাজী ভুঁঞা মসজিদ সংলগ্ন দীঘির পাড়ে সরকারি খাস জায়গার উপর জরাজীর্ণ ছোট্ট একটি টিনের ভাঙ্গা ঘরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল জলিলের একমাত্র ছেলে প্রতিবন্ধী মজিবুল হক হতাশার চাপ মাথায় নিয়ে বসে আছেন।
আলাপকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে মজিবুল হক বলেন, তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে এদেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি ২০১০ সালে মারা যাওয়ার আগে চিকিৎসার জন্য তাদের নিজ জমিটি বিক্রি করেন। এরপর তার মা, চার বোন এবং স্ত্রী ও দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অসুস্থ মা’কে গত ৩ মে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সকালে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে হয়েছে। মজিবুল হক হাটাচলা সহ কোন কাজই করতে পারেন না। থাকার একটি ঘরের জন্য তার অসুস্থ ষাটোর্ধ বৃদ্ধা মা পারুল বেগম ২০২০ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজমান বরাবর একটা লিখিত আবেদন করেন।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজমান তাদের জায়গাটি পরিদর্শন করে মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল জলিলের পরিবারকে একটি ঘর নির্মান করে দেওয়ার জন্য ছাগলনাইয়া উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। প্রতিবন্ধী মজিবুল হক তার দুই শিশু কন্যা ও চার বোনকে নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি ঘর নির্মাণের জন্য আকুতি জানিয়েছেন।