‘৪ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ, বেশি ভাড়ায় পারাপার’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জেরে ঢাকা পোস্টের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জুয়েল রানার ওপর হামলা চালিয়েছে একদল মাঝি। একইসঙ্গে নৌকা থেকে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যার হুমকিও দেন তারা। এ বিষয়ে পরে কুড়িগ্রাম সদর থানায় ৫ জন সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই গণমাধ্যম কর্মী।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কে শুলকুর বাজার এলাকায় হামলার এ ঘটনা ঘটে।
গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলে এ ঘটনায় নৌকার মাঝিরা সংবাদ প্রতিবেদক জুয়েল রানার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হন। মঙ্গলবার(১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জুয়েল রানা ও তার আরেক সহকর্মী কুড়িগ্রাম শহর থেকে শুলকুর বাজার হয়ে বাড়ি ফেরার সময় ওই ব্রিজের কাছে নৌকায় উঠলে মাঝিরা তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে জুয়েল রানাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার ওপর হামলা চালান।
শুধু তাই নয়, সংঘবদ্ধ মাঝিরা জুয়েল রানাকে নৌকা থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা সহকর্মী ফজলুল করিম ফারাজী এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন জুয়েল রানা।
সংঘবদ্ধ নৌকার মাঝিদের হামলা ও হত্যার হুমকির ঘটনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন জুয়েল রানা। আসামিরা হলেন— সদর উপজেলার পাঁচগাছী ছত্রপুর এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে পিনটু (২৫) ও মিলন (১৮) এবং একই এলাকার নুরুল, নজরুল ইসলাম, বক্কর আলীসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জন। আসামিরা নৌকার মাঝি।
এদিকে মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের নির্মাণাধীন শুলকুর বাজার ব্রিজের কাছে নৌকাযোগে লোক পারাপারের নামে মাঝিরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক জুয়েল রানা জানান, ওই রাস্তা দিয়ে তিনি নিয়মিত যাতায়াত করেন। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এবং নৌকায় চড়ে পারাপারে ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার যাত্রীরা প্রায়ই তাকে অভিযোগ করেন। বিভিন্ন জনের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি একটি সংবাদ প্রকাশ করলে মাঝিরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করেন। এসময় নৌকা থেকে পানিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে তাকে হত্যার হুমকি দেন। পরে সহকর্মীসহ স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ খাঁন মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।