উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর।। বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে যেতে বার বার ব্যর্থ হয়ে নিজ উদ্যোগেই গড়ে তোলেন গরুর খামার। এখন একজন সফল উদ্যোক্তা এবং লাভজনক মায়ের দোয়া ও গরু খামারের মালিক যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান আসাদ। শনিবার সকালে আসাদুজ্জামান আসাদের খামারে গিয়ে দেখা যায় দৃষ্টি নন্দন ২০টি মোটাতাজা গরু এবং ৬টি দুধেল গাভী। ১০ শতক জমিতে গড়ে উঠা এ খামার এখন গ্রামের অন্য বেকার যুবকদের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও প্রেরণার উৎস। খামারের মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, তার এ সফলতার পেছনে অনেক কষ্টের ইতিহাসও রয়েছে। নতুন উদ্যোমে পরিশ্রম করে আজ তিনি সফল এক খামারি। শুরুর কথা বলতে গিয়ে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমার হাতে সামান্য কিছু পুঁজি ছিল। তার সঙ্গে ধারদেনা করে যা টাকা পেলেন, তা দিয়ে বাজার থেকে দুটি উন্নতজাতের গাভী কেনেন আসাদুজ্জামান আসাদ। ভালোমতো যত্নের পর গাভী দুটি বেশ মোটাতাজা হয়। একসময় বাছুর হয়। গাভীগুলো দুধ দিতে থাকে। দিনে দিনে আসাদুলের সময় বদলাতে থাকে। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে ভাল জাতের গরু কেনেন এবং গরুর বংশবৃদ্ধিতে মনোযোগী হন। এখন গরুর খামার থেকে প্রতিদিন দুধ বিক্রি করেন ২০ থেকে ২৫ লিটার। প্রতিকূলতার কথা বলতে গিয়ে আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, অনেক সময় প্রয়োজনীয় ডাক্তার পাওয়া যায় না। নিজে নিজে প্রাণিসম্পদ অফিসে গিয়ে বিভিন্ন সময় পরামর্শ শুনেছেন। আস্তে আস্তে এখন তিনি বিভিন্ন রোগের কারণ ও তার প্রতিকার এবং প্রতিরোধের ব্যাপারে বেশ ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। খামার ঘুরে দেখা গেছে, আসাদুজ্জামান আসাদ খামারের পরিবেশ অনেক ভালো। ভেতর-বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন সব সময়। এ ছাড়া মশা-মাছি আর পোকামাকড় প্রতিরোধেরও ব্যবস্থা আছে। অনেককে গরু কিনতে আসাদুজ্জামান আসাদের খামারে ভিড় করতেও দেখা গেছে। গরুর খাবার নিয়ে আসাদুজ্জামান আসাদ বললেন, প্রতিদিন কাঁচা ঘাস, খড়, ভূসি, ভুট্টা, খৈল খাওয়াই। বড় একটি জমিতে উন্নতজাতের ঘাস নিজেই চাষ করি। আয়-ব্যয় সম্পর্কে তিনি জানান, খামারে দুইজন লোক কাজ করেন। তাদের দুইজনের প্রতি মাসে ২৪ হাজার টাকা করে বেতন দিতে হয়। প্রতি মাসে সাড়ে ১ লাখ টাকার খাদ্য কিনতে হয়। আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমি সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাইনি। তবে সরকার যেন উন্নতমানের ভ্যাকসিন সরবরাহ করে সেটা চাই। আসাদুজ্জামান আসাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এলাকার অনেকেই এ কাজ করছেন এবং তাতে অনেকেই সফলতা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।