আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই রাষ্ট্রের ভিত মজবুত করতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।
রোববার রাজধানীর বনানী পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার সূচনাপর্ব শুভ মহালয়ায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নিরবচ্ছিন্নভাবে বনানীতে পূজা আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম সব ধর্মের মূল মর্মবাণী মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন এবং মানুষের কল্যাণকে চেতনায় ধারণ ও অনুশীলন করলে দেশ, সমাজ, পৃথিবী অনেক শান্তিময় হতো, ধর্মের ভিত্তিতে হানাহানি থাকত না। আমাদের দেশে যে অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে চায়, মাঝে মধ্যে ফণা তুলে দাঁড়াতে চায়, ছোবল মারতে চায় সেই অপশক্তিকে সবাই মিলে দমন করতে হবে। তাহলেই যে চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত আমরা আরও মজবুত করতে পারব।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ রচিত হয়েছে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত সংগ্রাম এবং মিলিত রক্তের স্রোতের বিনিময়ে। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একযোগে লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যার নেতৃত্বে এই দেশ রচিত হয়েছে সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে’ ৭৫ সালে হত্যা করার পর যে চেতনার ভিত্তিতে দেশ রচিত হয়েছিল সেই চেতনায় আঘাত হানা হয়েছে, ভুলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। রাষ্ট্রকে আবার সাম্প্রদায়িক বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রের যে মূল চেতনার ওপর যে আঘাত হানা হয়েছিল, সেটিকে পুণরুদ্ধার করে মূল চেতনায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চেয়েছে তারা এখনো সাম্প্রদায়িক হানাহানি ছড়ায়, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার কঠোর ব্যবস্থা সবসময় গ্রহণ করেছে। দেশে একটি রাজনৈতিক পক্ষ আছে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে অপরাজনীতি করে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, আপনারা লক্ষ্য করুন, আমাদের দেশে প্রতিবছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটির কারণ হচ্ছে, মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা আছে, মানুষের সামর্থ্য আছে এবং একইসঙ্গে সরকার আপনাদের পাশে আছে। এই তিনটি কারণে প্রতিবছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গতবছর বিভিন্ন জায়গায় পূজার সময় গণ্ডগোল করার চেষ্টা করা হয়েছিল এর পরও গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।
এ বছর অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে সমগ্র দেশে পূজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জন হবে, দুর্গা উৎসবের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, সেই আনন্দ সারাবছর জাগরূক থাকুক এবং আপনাদের আনন্দের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আনন্দময় হোক, শান্তিময় হোক, আশাপ্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় শিল্পী মানষ সেনগুপ্তের সঞ্চালনায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি পান্না লাল দত্ত, সাধারণ সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ, শিল্পী লাল দত্ত প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।