বাংলাদেশ সীমান্তে টিয়ার শেল ও গোলাবারুদ নিক্ষেপের ঘটনায় আবারও প্রতিবেশী মিয়ানমারের ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে তলব করেছে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগামীকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রণালয়ে আসতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে দেশটিকে সতর্ক করবে ঢাকা। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলাবারুদ ও বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় সম্প্রতি আরও দুইবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সতর্ক করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
এর আগে শনিবার সকালে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে মিয়ানমারের মর্টারশেল ছোড়ার বিষয়ে প্রয়োজনে জাতিসংঘে উত্থাপন করা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তবে কাজ না হলে জাতিসংঘে জানানো হবে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের গুলি তাদের সীমানায় থাকা উচিত। তাদের বিজিপি বাহিনীর সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ইউনিয়ন সীমান্তে পরপর পাঁচটি মর্টার শেল নিক্ষেপ করে মিয়ানমার। এ ঘটনায় ইকবাল হোসেন (২১) নাম এক যুবক নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরও অন্তত পাঁচজন। এর আগে ওই দিন দুপুরের দিকে বান্দরবান সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে উনু সাই তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক ব্যক্তির পা উড়ে যায়।
সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমান্তের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই নাইক্ষ্যংছড়িতে দুটি যুদ্ধ বিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে দেশটি। দুটি ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবে বলে তখনও হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।
তারও আগে, ২৮ আগস্ট বিকালের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু এসে পড়ে।