গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ বেলা ১১.০০ টায় ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষায় নিয়োজিত সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২৪তম সভা সুরমা হল (লেভেল-২), প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, ঢাকা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব টিপু মুনশি এমপি। ২৯ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদের সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব তপন কান্তি ঘোষ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও বীমা ব্যক্তিত্ব জনাব শেখ কবির হোসেন, এফবিসিসিআই এর সভাপতি জনাব জসিম উদ্দিন, কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি জনাব গোলাম রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জনাব সিদ্দিকুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সভাপতি জনাব ফরিদা ইয়াসমিন, বিএসটিআই এর মহাপরিচালক ড. নজরুল আনোয়ার, জনপ্রশাসনে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সরকারের সাবেক সচিব জনাব মোঃ আবদুল মালেক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জনাব ফেরদৌস আহমেদ, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর প্রেসিডেন্ট মিসেস মনোয়ারা হাকিম আলী, এফবিসিসিআই এর পরিচালক মিসেস প্রীতি চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। সভাটি সঞ্চালনা করেন পরিষদের সচিব ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
মাননীয় মন্ত্রী উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানানোসহ ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষা, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, বাজারজাতকরণ ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে নিরলস কাজ করার জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান এবং কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সভায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রমের প্রতিবেদন পরিষদের অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও অধিদপ্তরের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত ৪টি ত্রৈমাসিক হিসাব বিবরণী এবং ক্যাব কর্তৃক ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ‘ভোক্তা অধিকার শক্তিশালীকরণ কার্যক্রম’ বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অধিকতর প্রচারের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব (Vokta Odhikar-DNCRP) চ্যানেলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম প্রচার এবং অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধির বিষয় অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হয়।
সভায় জানানো হয় যে অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত সময়ে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে ১৩৩২৪৯ টি প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডিত করে ৯২,৭৫,৭৫,৩৪২/- জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং একই সময়ে দাপ্তরিকভাবে প্রাপ্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি করে ৭৮০৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৫,৫০,৮৪,২০৮/- জরিমানা করা হয়। সভায় আরো জানানো হয় যে, দাপ্তরিকভাবে নিষ্পত্তিকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদায়কৃত জরিমানার ২৫%হিসেবে ৭৬৯৩ জন অভিযোগকারীকে ১,৩৫,২৫,৮০২/- প্রদান করা হয়। উপস্থিত সম্মানিত সদস্যবৃন্দ সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পরিচালিত কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। এছাড়াও সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ নিয়মিত বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখাসহ ভোক্তা ও ব্যবসায়ী বান্ধব বাজার ব্যবস্থা গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দ ভোক্তা-অধিকার বিষয়ে প্রচারণার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার, মিডিয়া কর্মীদের অংশগ্রহণে কর্মশালা আয়োজন এবং ঢাকাসহ জেলা পর্যায়ে ব্যবসায়ী সংগঠন ও অন্যান্য অংশীজনদের অংশগ্রহণে গণশুনানী আয়োজনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও শিশু খাদ্য, বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান, নকল, ভেজাল ঔষধ পণ্যসহ গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ কঠোর শাস্তি প্রয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব তপন কান্তি ঘোষ কমিটির সদস্যবৃন্দ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অন্যান্য দপ্তর সংস্থাকে সমন্বয় করে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।