কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফ্যানশিটে মাথার উপর পড়ায় চোখ হারিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। আহত শিক্ষিকার নাম শিরিনা আখতার (৪০)। তিনি কুড়িগ্রাম পৌরসভার নাজিরা চৌধুরী পাড়া দক্ষিণ গ্রামের শেখ আলমগীর কবীর বাবলু’র স্ত্রী।
স্কুলে ক্লাস নেয়ার সময় বাঁশে বাঁধা ফ্যানের দঁড়ি ছিঁড়ে ফ্যানের পাখার আঘাতে প্রাণে বেঁচে গেলেও ডান চোখ হারালেন এক সহকারি শিক্ষিকা।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষিকার ডান চোখ অপরারেশন করা হয়। চিকিৎনকরা জানিয়েছেন, তার ডান চোখের কর্ণিয়ার উপর আঘাত লেগে চোখটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এই চোখ দিয়ে দেখার আর কোন সম্ভাবনা নেই।
ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা মিলনী রানী রায় জানান, গত সোমবার (১ আগস্ট) দুপুরে দুজনে এক সাথে খেয়ে শিরিনা আখতার ৪র্থ শ্রেণির ক্লাস নিতে যান। গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে তার চিৎকার শুনে আমরাসহ আশপাশের ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকা ওই ক্লাস রুমে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি তার ডান চোখে রক্তাক্ত অবস্থা। মাথার উপরের ফ্যানটি বাঁশ দিয়ে বাঁধা ছিল। একদিকের বাঁশের বাঁধন আলগা হয়ে বাঁশটি হেলে পরলে ফ্যানের একটি ব্লেড সরাসরি তার ডান চোখে এসে আঘাত করে।
পরে আহত শিক্ষিকাকে দ্রুত কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার তার চোখের অপারেশন করা হয়। সাংবাদিকরা এ দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভয়ে আর স্কুলে আসেনি।
শিরিনা আখতারের স্বামী ও একই উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব শেখ আলমগীর কবীর বাবলু জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. মুফাক্খারুল ইসলাম মুকুল’র নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত অপারেশন করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আঘাতপ্রাপ্ত চোখের কর্ণিয়াা ড্যামেজ হয়ে যাওয়ায় সেই চোখ দিয়ে দেখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তিনি দাবী করেন শিক্ষা বিভাগ ও স্কুল কর্তপক্ষের গাফলতির কারণে স্কুলঘর সঠিকভাবে মেরামত না করায় তার স্ত্রীর একটি চোখ হারাতে হল।
গোড়াই দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমা ইয়াসমিন জানান, আমাদের স্কুল ঘরটি অপেক্ষাকৃত নীচু হওয়ায় অকস্মাৎ এ দুর্ঘটনায় আমরা মর্মাহত।
উলিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাদিরুজ্জামান জানান, আপনাদের মাধ্যমে প্রথম খবরটি জানলাম। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। ঘটনাটি অত্যন্ত দু:খজনক।