এখন পর্যন্ত অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ যে অবস্থানে পৌঁছেছে সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আম’রা একটা জায়গায় আসতে পেরেছি। এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে। আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) নিয়মিত সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে ভা’র্চুয়ালি যু’ক্ত হন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিরদিন আমিও থাকব না; কিন্তু বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা যেন ব্যাহত না হয় এটাই আমি চাই। আম’রা যেন এগিয়ে যেতে থাকি এবং যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছিল সেই আদর্শ যেন বাস্তবায়ন করতে পারি। তিনি বলেন, এ দেশের প্রতিটি গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়া, খাদ্য নিরাপত্তা প্রদান, চিকিৎসা’সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার ব্যবস্থা করা, সব ক্ষেত্রেই আজকে সরকার সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন, তাঁর আদর্শের সংগঠন- তাই যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নেই কাজ করেছে। তাই যতটুকুই অর্জন আমি মনে করি তা জনগণেরই অবদান। বাংলাদেশকে একটি অবস্থানে নিয়ে আসত পারার জন্য তাঁর সহকর্মীদের এ সময় ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে আম’রা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি, সেভাবেই বাস্তবায়ন করতে পেরেছি বলেই ঠিক যখন ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছি, তখনই উন্নয়নশীল দেশের ম’র্যাদা পেয়েছি। এটা আমাদের একটা বিরাট অর্জন। তবে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, একটানা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারার কারণে আম’রা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি এবং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের ম’র্যাদা পেয়েছে। কাজেই আমাদের ওপর জনগণের যেমন আস্থা ও বিশ্বা’স রয়েছে, তেমনি আমা’রও জনগণের প্রতি সেই আস্থা ও বিশ্বা’স রয়েছে।
এদিকে সরকার স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের পাশাপাশি আশু করণীয় নির্ধারণ ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সরকার ২০০৮-এর নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী যে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিল, তা বাস্তবায়ন করতে সম’র্থ হয়েছে। আজকের অর্জনের পেছনে পরিকল্পনা কমিশনের একটা বিরাট অবদান রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদেরও ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ঔপনিবেশিক আমলের শাসন কাঠামো পরিবর্তন করে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করতে চেয়েছিলেন এবং সে জন্য পদক্ষেপও নিয়েছিলেন, যার সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছিল। জাতির পিতা পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেন এবং এ দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের নিয়ে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ যেন কারো মুখাপেক্ষী না থেকে আত্মম’র্যাদাশীলভাবে গড়ে ওঠে, সেটাই ছিল তাঁর চিন্তা এবং দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
তিনি বলেন, তিনি এ দেশের যে মাটি ও মানুষ আছে তা দিয়েই বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁর যেমন আত্মবিশ্বা’স ছিল, তেমনি মাটি ও মানুষের প্রতি ছিল গভীর ভালোবাসা। কারণ, তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযু’দ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাঁর নির্দেশে যার যেটুকু সাম’র্থ্য ছিল তাই নিয়ে বিভিন্ন স্থানে পা’কিস্তানি হানাদার বাহিনীর বি’রু’দ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।