ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুদিন। পুরোদমে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ও যাত্রাবাড়ি মোড়ে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় চোখে পড়েছে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আশপাশের বাস কাউন্টার ও ঢাকা-পদ্মা সেতু সড়কের যাত্রাবাড়ি মোড়, দোলাইরপাড় চত্বরসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টার এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল দেখা গেছে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যাত্রীদের ঢল নামে। টার্মিনাল এলাকায় যেন হাঁটার জায়গা নেই। যাত্রীদের অ’ভিযোগ, ঈদ সামনে রেখে বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা অ’তিরিক্ত বেশি নিচ্ছে।
পরিবহণ সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এবার ঈদে দক্ষিণবঙ্গ, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, কক্সবাজার, কুমিল্লা,চাঁদপুর, নোয়াখালী অঞ্চলের রুটগুলোতে সড়কপথের যাত্রীরা অনেকটা স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন।তবে বিপত্তি হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের পদ্মা সেতু রুটে। ২৬ জুন পদ্মা সেতু চালুর পর এ রুটে যাত্রী ও গাড়ির চাপ অ’তিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি যেতে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং যাত্রাবাড়ি, দোলাইরপাড় মোড়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জে’লার যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। এসব জেলার মানুষ আগে আরিচা হয়ে ফেরি পার হয়ে বাড়ি যেতেন, এখন মাওয়া হয়ে যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু হওয়াতে বাড়ি যাওয়া সহজ হয়ে গেছে।
সায়েদাবাদ বাসি টার্মনালে ও যাত্রাবাড়ি মোড়ে বরিশাল, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা অঞ্চলের চলাচলকারী বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। অথচ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঈদুল ফিতরের সময় এসব বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর তেমন চাপ দেখা যায়নি।
ভাঙ্গা এলাকার যাত্রী সফিক যুগান্তরকে বলেন, ‘আগে আরিচা হয়ে বাড়ি যেতাম, এখন মাওয়া হয়ে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু হওয়ায় বাড়ি যাওয়া সহজ হয়ে গেছে। টিকিট ও বাস পেতে একটু ঝামেলা হচ্ছে।’অনেকে ঈদে বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা কম থাকলেও পদ্মা সেতু দেখার উদ্দেশ্যেও বাড়ি যাচ্ছেন। যার ফলে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর থেকেই দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা আরিচা ঘাট খুব কম ব্যবহার করছেন। ফলে ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতু দিয়ে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে যাত্রীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এর প্রভাব পড়েছে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে, যাত্রাবাড়ি মোড়, দোলাইরপাড় চত্বর, পোস্তগোলা এলাকায়। এসব এলাকায় যাত্রী, বাসসহ ব্যক্তিগত যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ বেড়েছে। দোলাইরপাড় গোলচত্বর থেকে যাত্রাবাড়ি মোড় পর্যন্ত আগের তুলনায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল আদায় কাউন্টার পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা। সড়কে ছোটবড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। যানবাহন চলে হেলেদোলে ধীরগতিতে। ফলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রাবাড়ি মোড় হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড পর্যন্ত তীব্র যানজটে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
ওয়ারী ট্রাফিক জোনের টিআই জাকারিয়া মেনন যুগান্তরকে বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের পর যাত্রাবাড়ি, দোলাইরপাড়, সায়েদাবাদ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। সড়কে মানুষ ও যানবাহনের চাপ অতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে। যার ফলে সড়কে যানজটের মাত্রাও বেড়ে গেছে।