বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও চাঁদপুর-৫ নির্বাচনী আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুর রবের কাছে রাজনৈতিক হাতে খড়ি সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুনের । রব সাহেবের সততা, সাহসিকতা ও কর্মীদের প্রতি আন্তরিকতাই মিঠুন ভদ্রের রাজনীতির পথের পাথেয়।
আশি ও নব্বইর দশকে হাজীগঞ্জের রাজপথ কাঁপানো ছাত্রলীগ নেতা মিঠুন ভদ্র উপজেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করে আসছেন। রাজনৈতিক হাল না ছাড়লেও প্রয়াত সাংসদ আবদুর রব সাহের মৃত্যুর পর সংগঠনে তাঁর আর কোন পদপদবী ভাগ্যে ঝুটেনি। তিনি জাতীয় পার্টি আর বিএনপি সরকারের শাসনামলে ২৯ বার গ্রেফতার হয়। তিন বার কারাবরণ করেন। মিঠুন ভদ্র আওয়ামী লীগের জন্যে ত্যাগী আর পরীক্ষিত এক নেতৃত্বের নাম।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় জোটের সন্ত্রাসীরা হাজীগঞ্জের টোরাগড় এলাকায় রেলপথে নিয়ে যায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। ওই স্থানে স্থানীয়দের তোপের মুখে তিনি সেখান থেকে জীবিত ফিরে আসতে সক্ষম হন। একই বছর হাজীগঞ্জ বাজারস্থ হলুদ পট্টির একটি আবাসিক হোটেলে গুলি করে জোট সরকারের সন্ত্রাসীরা। গুলি লক্ষভ্রষ্ট হওয়ার কারণে সে যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। সাধারণ ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহকারী এই ত্যাগী নেতা আওয়ামী লীগের এই স্বর্ণযুগে এসেও থেকেছেন সকল লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি নেতৃত্বে আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে সকল দায়িত্ব আর সত্যিকার আওয়ামী লীগ সমর্থক আর ত্যাগী, অবহেলিতদের মূল্যায়নে সংগঠনের কমিটি গঠন করে একটি জনমুখী ও কর্মী বান্ধব সংগঠন করা হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের ঐক্য বদ্ধ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল নির্দেশ বাস্তবায়ন করবেন সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সাথে।
স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ১৯৯৪ সাল থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের আদর্শিক অনুপ্রেরণায় রাজনীতি করছেন সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন।
হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের মৃত অরুণ কুমার ভদ্রের ছেলে সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন গ্রাজুয়েশন সম্পন্নকারী। তার একমাত্র সন্তান ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। ১৯৮৩ সালে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সহ-সভাপতি পদে আসীন হয়ে সংগঠনে হাতেখড়ি হয় মিঠুন ভদ্রের। এর পরে রাজনীতিতে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক ও ১৯৮৯ সাল একই সংগঠনের সহ-সভাপতি পদে আসীন হন আর সর্বশেষ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি পদে নির্বাচিত হন ১৯৯২ সালে। তার সময় হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যেকটি কলেজ, স্কুল, মাদ্রাসা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও সকল ওয়ার্ডে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। তার সময় হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রায় ৮ হাজার কর্মীর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের ফসল আজকের উপজেলা আওয়ামীলীগের শক্ত অবস্থান।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৮৫-১৯৯৫ ও ২০০২-২০০৫ সময়কালে এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২৯টি মিথ্যা মামলায় ৩ বার কারাবরণ করেন। ওয়ান ইলেভেনের তৃতীয়দিন যৌথবাহিনী রাত ৩.৪৫ মিনিটে হাজীগঞ্জ মকিমাবাদ গ্রামের বাড়ী হতে চোখ-হাত বেঁধে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে আদালত থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে তিনি জামিন লাভ করেন। ওইসময় হাজীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীবৃন্দ ও স্থানীয় সকল মহলের সহযোগিতায় তিনি মুক্তি পান।
ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনকালে ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (দুইটি মাধ্যমিক ও একটি নি¤œ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ), ১৪টি মাদ্রাসা, ৪টি কলেজ, ১টি পৌরসভা, ১১টি ইউনিয়ন, ১০৮টি ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটি গঠন করেছেন সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে। সেই সময় উপজেলাসহ বিভিন্ন শাখা ছাত্রলীগে মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আনার কারণে ওই সকল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সময় আর বয়সের কারণে আজকে আওয়ামী লীগে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। তারা জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচন এবং দেশরত্ম শেখ হাসিনার সকল নির্দেশ পালন করে উপজেলা আওয়ামীলীগকে সাংগঠনিকভাবে বেগবান করে তোলেন।
জানতে চাইলে সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন বলেন, হাজীগঞ্জের মধ্যে যাদের সান্নিধ্যে আমি রাজনীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছি, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন : মৃতুঞ্জয়ী কারানির্যাতিত আওয়ামীলীগ কর্মীদের বিপদের বন্ধু, আন্দোলন সংগ্রামের অভিভাবক কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক, মরহুম আবু জাফর মঈনুদ্দিন, আলী আহম্মদ মিয়া, আঃ আউয়াল মিয়া, আলী আজ্জম মজুমদার, হোসেন ইমাম হায়দার, সিরাজুল ইসলাম, আঃ মতিন ভূঁইয়া, আবুল খায়ের চেয়ারম্যান, হাসমত উল্যাহ হাসু, ছাত্রনেতা বিল্লাল হোসেন তারেক, আবদুল মালেক, মুক্তিযুদ্ধা আনোয়ার হোসেন লেদা ভাই, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, মোশারফ হোসেন বাবুল, হাবিবুর রসুল আনসারী চঞ্চল, মিজানুর রহমান স্বপন, ইসহাক আলী খান মিন্টু, মো. শাহআলম, তপন বিশ্বাস, ছাত্রনেতা হাফেজ আহম্মদ, লিটন সাহা প্রমুখ। আন্দোলন সংগ্রামে ছোট ছোট নিষ্পাপ সহযোগি বন্ধু ভুট্টো, কাদের, রিপন, হান্নানসহ অনেকের কথা আজও তিনি স্বরণ করেন।
এছাড়াও তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে পুলিশ ও বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমার পরিবারের ওপর অনেক হয়রানি করেছে। আমার বাবাকে বিএনপির সন্ত্রাসীরা অপমান অপদস্থ করে। বহুবার আমার বাড়ীঘর ঘেরাও করে গভীর রাতে তল্লাশী চালায় পুলিশ। হাজীগঞ্জ-টোরাগড়, দেশগাঁও, হাটিলা, বাকিলা, এনায়েতপুর, বেলচোঁ, সুহিলপুর, রামচন্দ্রপুরসহ অনেক স্থানে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। নিজের ও পরিবারের এমনকি আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাতে হতো স্বৈরাচার সরকারের আমলে। রাজনৈতিক কর্মকান্ডে হাজীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী পরিবার ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকলে আমাকে সাহায্য ও পরামর্শ দিয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন।
তাই আসন্ন উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলনে সারাণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হিসেবে সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন তিনি।