রক্তদাতা মিতুল হোসাইনের সংগ্রামের গল্প
বৃহত্তর সেচ্ছায় রক্তদান সংস্থা রক্তদাতার সন্ধ্যানে বিক্রমপুর (RSB) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি -মিতুল মুমূর্ষু হোসাইন বলেন, রোগী, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা, আগুন ও অ্যাসিডে পুড়ে দগ্ধ, হৃদরোগ, ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত, প্রসবকালীন রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত মা, অস্ত্রোপচার, কিডনি প্রতিস্থাপন, রক্তে অ্যানিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, রক্ত বমি, ডেঙ্গু জ্বরসহ নানা কারণে রক্তের প্রয়োজন হয়ে থাকে। সময় মতো রক্তের যোগান না হলে রক্তপ্রত্যাশী রোগী মারা যেতে পারে। এমন সংকটময় মুহূর্তে মুহুর্তে রক্তদাতারা ছুটে যান মিতুল হোসাইন রক্তের ডোনার নিয়ে। রক্তদান করেন স্বেচ্ছায়, বাঁচে মানুষের জীবন। রক্তদাতারা মনে করেন, একের রক্তে অন্যের জীবন বাঁচে। তাতে মন্দ কী? কাউকে রক্ত দিতে পারলে একটা মানসিক প্রশান্তি ও আত্মতৃপ্তি অনুভব করা যায়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের দাবি, রক্তদানে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও নিয়মিত সুস্থ থাকা যায়, জটিল ও দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি, শরীরে রক্ত প্রবাহিত মারাত্মক রোগ যেমন- হেপাটাইটিস-বি, এইডস, সিফিলিয়া, জন্ডিস ইত্যাদির জীবাণু আছে কি-না নিশ্চিত হওয়া যায়। প্রতিদিন হাসপাতাল, ক্লিনিকে রক্তের জন্য হাহাকার চলে। রক্তদাতারা ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়ান। শুধু শ্রীনগর নয়, সব যায়গায় বেড়েছে সচেতনতা। তার একটা উদাহরণ- মুন্সিগঞ্জ জেলা। এই প্রান্তিক অঞ্চলে অনেকেই রক্ত সহায়তায় কাজ করছেন। তাদের মধ্যে থেকে মিতুল হোসাইন রক্তদাতার গল্প তুলে ধরছি। ৪বার রক্ত দিয়েছে মিতুল হোসাইন একা ৫০০+ ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছে অসহায় রোগীদের জন্য। এ পর্যন্ত ৪বার রক্ত দিয়েছেন। সর্বশেষ রক্ত দিয়েছেন এ বছরের রমজান মাসে একজন মুমূর্ষু সিজারের রোগীকে। রক্তদানের শুরুর গল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে থেকে সামজিক কার্যক্রমের সাতে জরিত। যখন ডাক্তার বুঝিয়ে দিল যে, ৪ মাস পরপর রক্তদান করলে শরীরের রক্তের কণিকা দ্রুত বাড়ে এবং একজন মুমূর্ষু রোগীর উপকার হয়। তখন থেকেই নিয়মিত তিন মাস পর পর মুমূর্ষু রোগী বা অসহায় রোগীকে রক্ত দিয়ে থাকি। সর্বশেষ একজন সিজারের রোগীকে ফেমাস জেনারেল হাসপাতালে রমজান মাসে ৪তম রক্ত দিয়েছি। শুরুতে রক্তদানকালে একটু খারাপ লেগেছিল কিন্তু এখন না। চার মাস পরপর রক্ত না দিলে শরীর ভালো থাকে না লাগে।’ মিতুল শুধু নিজে রক্ত দেন না, অন্যকেও উৎসাহ দেন রক্তদানে। তাই ‘রক্তদাতাদের সন্ধানে বিক্রমপুর ’ নামের একটি অনলাইন স্বেচ্ছাসেবী গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পে অংশ নিয়ে থাকেন। তরুণ শিক্ষার্থীদের যুক্ত করছেন এই সংগঠনে। তারাও রক্তের দরকার হলে এগিয়ে আসে। তার এ কাজের স্বীকৃতি মিলেছে সংগঠন থেকেও। পেয়েছেন সেরা রক্তদাতার সম্মাননা। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রক্তদান কর্মসূচি ও সামাজিক কাজ করে অসহায় মানুষের উপকার করার চেষ্টা করবো। রক্তদান করলে নিজের শরীরের দূষিত রক্ত বের হয়ে যায়, রক্তের কণিকা বাড়ে। রক্তদান করলে অসহায় মানুষ উপকৃত হয়, দোয়াও পাওয়া যায়।’ ৪বার রক্ত দিয়েছি, ১০০ বার দিতে চাই:মিতুল হোসাইন বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা শ্যামসিদ্বি গ্রামে বাড়ি। বয়স ঠিক ২২ পার হয়েছে। এরই মধ্যে রক্ত দিয়েছেন ৪বার। রক্তের গ্রুপ ‘এবি পজেটিভ’। শুরুর গল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, কোয়ান্টাম স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম থেকে রক্তদানে অনুপ্রেরণা লাভ করি। প্রথম রক্ত দেই ২০১৮ সালে এপ্রিলের ১৪ তারিখে। মাঝে মাঝে অন্যদের রক্তদানে উৎসাহ দেই। তবে নিজে নিয়মিত রক্ত দিই। আমি চার মাস পর পর গিয়ে রক্ত দেই।’ এ নিয়ে ভবিষ্যত ইচ্ছা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি সবার কাছে দোয়া চাই, যেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ১০০ বার রক্তদান করতে পারি। এছাড়াও রক্তদান সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়াবো।’ মানবিকতার চিন্তা থেকে রক্ত দেই:
তার রক্তদাতাদের সন্ধানে বিক্রমপুর [R.S.B] সংগঠন থেকে প্রায় ১২০০+ ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট পরিচলনা করে থাকে তাদের সংগঠন
সবার কাছে মিতুল হোসাইন দোয়া চেয়েছেন সবাই পাশে রেখে সামনের দিনে এগিয়ে যেতে চায়।