রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) দেওয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদনের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আগামী ১৪ আগস্ট শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৬ জুন) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বারজজ আ’দা’লত এই আদেশ দেন।ইসির আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. মোহাম্মদ ইয়াসীন খান। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইসির আইনজীবী নিজে।
গণসংহতি আ’ন্দোলনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া জানান, ইসির আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন আ’দা’লত। আগামী ১৪ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হবে।এর আগে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আ’ন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে রায় দেওয়া হয়। ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া জানান,গণসংহতি আ’ন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে। পরের বছর ২০১৮ সালের ১৯ জুন নির্বাচন কমিশন এক পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে না মর্মে অবহিত করে। পরে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক মো. জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি উচ্চ আদালতে রিট মামলা দায়ের করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রিট মা’ম’লায় উচ্চ আদালত ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল রুল মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে রায় ও আদেশের অনুলিপি প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন প্রদানের আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।গণসংহতি আ’ন্দোলনের পক্ষ থেকে এ রায় ও আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনকে দাখিল করা হয়। আদালত থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রায় ও আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়।
জ্যোর্তিময় বড়ুয়া আরও বলেন, আদালতের সুস্পষ্ট রায় ও নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এরপর বিভিন্ন সময় এই রাজনৈতিক দলের পক্ষে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ফল না পাওয়ায় ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে মো. জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে আদালত অবমাননা মামলা (নং ৭৮/২০২২) করেন। এরপর সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।