আকাশ সরকারঃ
আটকের পর ২০হাজার টাকা দাবি করেন রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ হায়দার আলী ও এটিএসআই বাবর। টাকা দিতে অপারগতা দেখালে আমার ছেলে নাইমুল ইসলাম রিয়াদ (১৯)পিটিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে ফাঁড়ি ইনচার্জ হায়দার, এটিএসআই বাবর ও কন্সটেবল রায়হান। এমনই অভিযোগ যুবক রিয়াদের পিতা মোঃ নজরুল ইসলামের।
আহত নাইমুল ইসলাম রিয়াদ মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার দড়িখরবোনা এলাকার মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে।
বুধবার (১ জুন) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহানগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে (৪ নং) ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওটিতে চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছে যুবকের পিতা নজরুল।
আহত রিয়াদের পিতা নজরুল ইসলাম জানান, আমার ছেলের জন্য নিউমার্কেট ফুডপান্ডাতে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিলো। বুধবার সেখানে তার ট্রেনিং ছিলো। আমি তাকে নিয়ে ফুড পান্ডায় যাই। বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে আমার ছেলে আমাকে বলে আব্বু আমি বাইক নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি, দ্রুত চলে আসবো। এই বলে সে বাড়ির উদ্দেশ্যে যায়। পরে দুপুর ১২টায় আমাকে ফোন করে বলে আব্বু আমাকে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই বাবর ও কন্সটেবল রায়হান ধরে নিয়ে এসেছে। তারা আমার পকেটে কি যেন ঢুকিয়েছে। বলছে তোর বাড়ির লোক ডাক? আমার ছেলের এমন কথায় আমি দ্রুত মালোপাড়া ফাঁড়িতে যাই। সেখানে এটিএসআই বাবর ও কন্সটেবল রায়হান বলে, আপনার ছেলের পকেটে মাদক পাওয়া গেছে। ছাড়াতে হলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। আমি টাকা দিতে অপরগতা জানালে তারা বলে কি ভাবে টাকা ম্যানেজ করবেন আপনি বোঝেন। আপনার ছেলেকে সাইজ করতে চারতলায় নিয়ে যাচ্ছি। এরপর আমি সেখান থেকে টাকা ম্যানেজ করতে আমার বাড়ি চলে আসি। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এটিএসআই বাবর আমাকে মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে বলে দ্রুত রামেক হাসপাতালে আসেন আপনার ছেলে ছাদ থেকে নিচে লাফ দিয়েছে।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, রামেকে গিয়ে দেখি পুলিশ আমার ছেলেকে ঘিরে রেখেছে। তারা নিজেরাই আমার ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছে।
তার দাবি, ছাদ থেকে পড়ে ছেলের মাজা, পা, হাত ভেঙ্গে গেছে। মাথা ফেটে ক্ষত হয়েছে এবং ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে ৪র্থ তলা থেকে নিচে লাফ দিতে বাধ্য করছে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
রামেকে গিয়ে জানতে চাইলে আহত যুবক নাইমুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, পুলিশের মারপিটে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। কিভাবে ৪র্থ তলা থেকে নিচে পড়লাম বলতে পারবোনা, বলেই পূণরায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন যুবক।
জানতে চাইলে এটিএসআই বাবর বলেন, রামেকে রোগী নিয়ে ব্যস্ত আছি। পরে বিস্তারিত জানাবো।
জানতে চাইলে মালোপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হায়দার আলী জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যুবক নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে ৪র্থ তলায় নিয়ে যায় এটিএসআই বাবর ও কন্সটেবল রায়হান। জিজ্ঞাসাদের এক পর্যায়ে সে পানি খেতে চায়। তার জন্য পানি নিয়ে আসার পর দেখা যায় যুবক রিয়াদ নাই। অনেক খোঁজাখুজির পর তাকে পাশের বাড়ি টিনের নিচে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। সাথে সাথে তাকে নিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তার এক্সরে রিপোর্ট ভালো। তার রক্তে হিমোগ্লোবিন একটু কম। তবে বাম হাত ভেঙ্গে গেছে তার।
নিচে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ধারনা ৪র্থ তলার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে যুবক। কিছুদুর নামার পর পালালোর লক্ষ্যে পাশের বাড়ির টিনের উপর লাফ দিয়েছে বলে প্রথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে বলেও জানান এসআই হায়দার।