তহিদুল ইসলাম রাসেল, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধানঃ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ
আফগানিস্তানে নারীদের জনসমক্ষে সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা বোরকা পরার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা ও তালেবান প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। কোনো নারী এ নির্দেশনা না মানলে তার বাবা কিংবা নিকটতম পুরুষ আত্মীয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
তালেবান প্রধান আখুন্দজাদার জারি করা এক ডিক্রিতে বলা হয়, আফগান নারীদের চাদোরি (মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা বোরকা) পরা উচিত। কারণ এটি দেশের ঐতিহ্যবাহী এবং সম্মানজনক পোশাক। শনিবার (৭ মে) কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ডিক্রি প্রকাশ করে স্থানীয় প্রশাসন। খবর আলজাজিরার।
আফগানিস্তানের ধর্ম প্রচার ও অধর্ম প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে আখুন্দজাদার ডিক্রি পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, কোনো নারী মুখ না ঢেকে ঘরের বাইরে বের হলে তার বাবা কিংবা নিকটতম পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করা হবে এবং তাকে (আত্মীয়) বন্দি করা হবে। এমনকি সরকারি চাকরি থেকেও বরখাস্ত করা হবে।
আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর বারবার যে বিষয়টি সামনে আসছে তা হলো নারী অধিকার। কট্টোর এ গোষ্ঠীটির নানা পদক্ষেপে আফগান নারীদের জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে। গত বছরের ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবানের বিরুদ্ধে রাজপথে নামেন নারীরা। নিজেদের অধিকার আদায়ে এখনো সোচ্চার তারা।
এদিকে আফগানিস্তানে এখন নারীদের বোরকার পাশাপাশি পুরুষদের ইসলামিক পোশাক বানানোর ধুম পড়েছে। টেইলারের দোকানে কুর্তা, পায়জামা বানাচ্ছেন পুরুষরা। যেসব ব্যবসায়ী বছরের পর বছর পশ্চিমা পোশাক জিন্স-স্যুট বিক্রি করে আসছেন, তাদের এখন মাথায় হাত। অচল হয়ে পড়ছে তাদের আয়ের চাকা।
আফগানিস্তানে তালেবান দায়িত্ব নেওয়ার পর, নারীদের বোরকা কেনার হিড়িক পড়ে যায়। এ সুযোগে বোরকার দামও বেড়ে যায় বহুগুণ। এবার পুরুষরা দলে দলে বানাচ্ছেন আফগান কুর্তা, পায়জামা আর কোটি। আগের চেয়ে তাই ব্যবসা ভালো টেইলারিংয়ে।
তারা বলেন, আমাদের ব্যবসা এখন চাঙা। মানুষজন আর জিন্স, টি-শার্ট কিনছেন না। তারা ঐতিহ্যবাহী আফগান পোশাক বানাচ্ছেন। যদিও মানুষের হাতে অর্থ খুব একটা নেই। তবুও পরিস্থিতির শিকার হয়ে তারা এটি করছেন।
মূলত তালেবান ধারার সঙ্গে সমন্বয় করে ইসলামিক পোশাকের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে আফগানরা। তাই পশ্চিমা পোশাক ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে। এ অবস্থায় ব্যবসায় মন্দদশা শপিংমলগুলোতে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ইসলামিক আমিরাত প্রশাসন আমাদের ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে। তবে ক্রেতা নেই একদম। এভাবে যদি ক্রেতাশূন্য অবস্থা চলতে থাকে তাহলে বেশিদিন ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যাবে না।