নওগাঁয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরা উত্তরের সীমান্তবর্তি জেলা নওগাঁ। জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্রায় অর্ধশতাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা। পরিবার-পরিজন নিয়ে পর্যটকদের পক্ষে একদিনে একাধিক ঐতিহাসিক স্থান দর্শন করা সম্ভব নয়। তাই স্বল্প খরচে একদিনে একাধিক ঐতিহাসিক প্রত্নত্বাত্তিক নিদর্শনগুলো ভ্রমণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রথম ৩৮জন পর্যটককে নিয়ে পিপ পিপ শব্দে যাত্রা শুরু করলো ট্যুরিষ্ট বাস “ভ্রমণ বিলাস”।
বুধবার সকালে শহরের মুক্তির মোড়ে পদ্মা বাস কাউন্টার থেকে ট্যুরিস্ট বাস “ভ্রমণ বিলাস” এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ট্যুরিস্ট বাস “ভ্রমণ বিলাস” এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরুক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএমএ মামুন খাঁন চিশতি, নওগাঁ সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মোস্তফা কালিমী বাবু, নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা প্রশাসক ফিতা কেটে বাসের উদ্বোধন করেন। এরপর পর্যটকদের ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। এরপর ভ্রমণ বিলাস পর্যটকদের নিয়ে নির্ধারিত প্রতœত্বাত্তি¡ক নিদর্শনগুলোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এসময় জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, পর্যটকদের সকল প্রকারের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেই এমন ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশাবাদি নওগাঁসহ সারা দেশের ভ্রমণ পিপাসুদের চাহিদা পূরণ করবে এই ভ্রমণ বিলাস। এতে করে নওগাঁর পর্যটন খাত দিনে দিনে আরো চাঙ্গা হয়ে উঠবে। পর্যটকদের মতামত ও পরার্মশকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে এই ভ্রমণ আরো আকর্ষনীয়, আরামদায়ক ও আনন্দদায়ক করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নওগাঁর পর্যটন এলাকাগুলোর আর্থ সামাজিক অবস্থার অভ’তপূর্ব পরিবর্তন হবে বলেও আমি আশাবাদি।
তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের বাস্তবায়নে প্রাথমিক ভাবে ৪৫০টাকার একটি প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। এই প্যাকেজের মাধ্যমে একজন পর্যটক খুব সহজেই প্রথমে ভারত সীমান্তঘেষা উপজেলা ধামইরহাট উপজেলার জাতীয় উদ্যান শালবন বিহারের আলতাদীঘি, ঐতিহাসিক জগদ্দল বিহার, বদলগাছী উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও হলুদ বিহার ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়া প্যাকেজের মাধ্যমে ভ্রমণরত পর্যটকরা সকাল ও বিকেলের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার পাবেন। বাড়তি আকর্ষন হিসেবে প্রতিবার ভ্রমণের দিন বিকেলে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-তাত্তি¡ক শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। এরপর হলুদ বিহার দর্শন শেষে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে এসে শেষ হবে ওইদিনের ভ্রমণ। প্
রাথমিক পর্যায়ে ৪টি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের রুট হিসেবে নির্ধারন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটকদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে জেলার সকল ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের জন্যও প্যাকেজ তৈরি করা হবে। পর্যটকরা এই ভ্রমণের ফলে জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত হাজার হাজার বছর আগের প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনগুলো সম্পর্কে নতুন করে জানার সুযোগ পাবেন। ঈদের প্রথম সাতদিন এই ট্যুরিস্ট বাস প্রতিদিন এই ঈদের ৭ দিন চলাচল করবে বলে জানান।