শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপারে এ দৃশ্য দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পি বলেন, স্বাভাবিক অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ের জন্য একাধিক লেন চালু রাখা হয়। তবে ঈদে এই মহাসড়কে কয়েকগুণ যানবাহন বেড়ে যায়। এ কারণে যানজটমুক্ত রাখতে সেতুতে বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানবাহনের জন্য সাতটি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের জন্য গোলচত্বর থেকে বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে আলাদা দুই লেন করা হয়েছে। এর পরও সকালে হঠাৎ অতিরিক্ত মোটরসাইকেলের চাপ বেড়ে যায়। ফলে কিছু সময়ের জন্য মোটরসাইকেলে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে মোটরসাইকেলের লেন স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজট নেই। তবে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২০-২১ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। ঈদে এর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ৩৩ হাজার ৭৩৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। আর টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৭৭ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গাড়ির চাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। সেতুর টোলপ্লাজার উভয় পাশে ১৮টি পয়েন্টে টোল আদায় করা হচ্ছে। সড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর গত ঈদে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৭৬৮টি যানবাহন পারাপার হয়। যা এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপারের রেকর্ড।
গোবিন্দ ঘোষ নামের এক বাসচালক বলেন, মহাসড়কে যানজট নেই। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা এসেছি মাত্র এক ঘণ্টায়। তবে গরমে যাত্রীরা কষ্টে যাতায়াত করছেন। অনেকে আবার পিক-আপ ভ্যানে রোদে পুড়ে বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে মহাসড়ক পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নূরে আলম মিনা। তিনি এলেঙ্গায় সাংবাদিকদের বলেন, মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে পুলিশ সদস্যরা রাত-দিন নিরলস দায়িত্ব পালন করছেন। এখন পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট হয়নি। আশা করি, অন্য যেকোনো বারের তুলনায় এবার স্বস্তিতে মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবেন।
এ সময় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক জয়ব্রত পালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ওয়ানওয়েতে চলছে যানবাহন। ঢাকামুখী গাড়িগুলো বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর হয়ে ভূঞাপুর দিয়ে এলেঙ্গা মহাসড়কে উঠছে।
এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী ঈদে ঘরমুখো জনগণের ভোগান্তি এড়াতে মহাসড়কের পাশে ১৫টি অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করে দিয়েছেন। স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে দেশের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন এবং অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে ঈদসহ যেকোনো উৎসবের ছুটিতে যানজট ও ভোগান্তি হয়ে থাকে।