রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
ষোলঘরে  জাতীয়তাবাদী যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত  শ্রীনগরে তন্তরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ-চায়না ক্লাব রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

ফুলবাড়ীতে বিষমুক্ত পেয়ারা চাষে সাফল্য-দৈনিক বাংলার অধিকার

নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিধিনিঃ / ২৩৪ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২, ১০:০৫ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় বিষমুক্ত পেয়ারা চাষে সাফল্য পেয়েছেন ১৪ উদ্যোক্তা। তাঁদের এই সাফল্যে এলাকায় বেশ সারা পড়েছে। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি কৃষিতে পরিবর্তন আনতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা।

একটা সময় হন্যে হয়ে চাকরির পেছনে ছুটেছেন এই ১৪ বন্ধু। পরে সবাই মিলে শুরু করেন পেয়ারা চাষ। উন্নত জাতের চারা গাছ রোপণ, অনুকূল আবহাওয়া এবং সঠিক পরিচর্চায় চারা রোপণের ৯ মাসের মধ্যে পেয়ারা তুলে বিক্রিও শুরু করেছেন। তাদের পেয়ারা বাগান দেখতে স্থানীয়রাসহ দুর-দুরান্তের অনেকেই আসছেন। উদ্যমী এই উদ্যোক্তারা বলেন, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ পেলে তাঁরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবেন।

এই ১৪ উদ্যোক্তা হলেন—জামাল হোসেন, মাসুদ রানা, জালাল উদ্দিন, সাজ্জাদ আলম, মোস্তাফিজার রহমান, সুমন শেখ, হারুণ-অর-রশিদ, আলমিরানী সবুজ, কামরুজ্জামান মুরাদ, আকরাম হোসেন, কামাল হোসেন, ইমান হোসেন, সেলিম রেজা ও ফারজানা ইসলাম নাবিলা।

তাঁরা ‘ফুলবাড়ী ফ্রেন্ডস অ্যাগ্রো’ নামের একটি যৌথ খামার স্থাপন করে শুরু করেন পথচলা। সেই সঙ্গে পেয়ারা চাষে এক উজ্জ্বল সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন ১৪ উদ্যোক্তা। পেয়ারা চাষ করে জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে রপ্তানির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বপ্ন বুনছেন তাঁরা। মাত্র ৯ মাসের মাথায় গত এক সপ্তাহের মধ্যে বাগানের পেয়ারা প্রায় ২ হাজার টাকা মণ বিক্রি করতে পেরে বেকারত্বের অবসান ঘটবে বলে তাঁদের আশা। এই ১৪ বন্ধুর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সংগ্রাম দেখে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়রা মনে করছেন আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।

প্রথমে এই ১৪ উদ্যোক্তা ৭ জন শুরু করেন কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক চাষ। কিন্তু স্পিরুলিনা চাষে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, দক্ষ লোকবল, বাজারজাতকরণে নানা প্রতিকূলতার কারণে থেমে যায় এ প্রকল্প। লোকসান গুনতে হয় লাখ লাখ টাকা। তবে পিছু না হটে এই ৭ তরুণ আরও ৭ জনকে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত করে নতুন উদ্যমে শুরু করেন পেয়ারা চাষ।

সরেজমিন উপজেলার তালুক শিমুলবাড়ী এলাকায় পেয়ারা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ১০ বিঘা জমির বিশাল এলাকা জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। এ জমি ৫ বছরের চুক্তিতে বর্গা নিয়েছেন তাঁরা। জমিতে লম্বালম্বি করে পেয়ারার চারা লাগানো হয়েছে। একটি চারা থেকে আরেকটির দূরত্ব প্রায় ৫ হাত। চারা গাছগুলো দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা। প্রতিটি গাছের লম্বা শাখা কেটে গোলাকার করা হয়েছে। এতে ফুল ও কুঁড়িতে ভরপুর। অনেক গাছে ফল হয়েছে। পেয়ারার ভারে নুয়ে পড়েছে।

কর্মরত শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত এসব গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত। পেয়ারা তুলছেন। খুঁটি দিয়ে সোজা করে গাছ বেঁধে দিচ্ছেন। উদ্যোক্তাদের একজন জালাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের ২৮ জুন তাঁরা থাই পেয়ারার গোল্ডেন সুপার-৮ জাতের ৩ হাজার ৭০০ চারা রোপণ করেন। এসব চারা নাটোরের ঝিনাইদাহ থেকে অনেক কষ্টে সংগ্রহ করেছেন। দামও পড়েছে অনেক বেশি।

মাসুদ রানা ও জামাল হোসেন মন্ডল বলেন,‘চাকুরির জন্য অনেক ঘুরে না পেয়ে শেষে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে পেয়ারার চাষ শুরু করেছি। আশা করছি পরিশ্রম সফল হবে। জমি বর্গা, পেয়ারা চারা ক্রয়, জমিতে বেড়া দেওয়া, সেচ, সার, পরিচর্যা ও অন্যান্য সব মিলে এ যাবৎ ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের পেয়ারা বাগানে প্রতিদিন ৫-১৯ জন শ্রমিক কাজ করেন।’

আকরাম হোসেন জানান, চারা রোপণের ৫ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে। ৯ মাসে পুরোপুরি ফল দেওয়া শুরু করে। এখন আমরা প্রতি সপ্তাহে বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্ৰহ করছি। এসব পেয়ারা ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি করছি। এতে প্রতি সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। মাসে খরচ বাদে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হবে।

পেয়ারা বাগানের শ্রমিক স্থানীয় ওবাইদুল হক ও মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছি। কখনো বেশি শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। স্থানীয়ভাবে কাজের নিশ্চয়তা আমরা অনেকটা স্বস্তিতে আছি।

জমির মালিক গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব বলেন, ‘একদিন ১৪ বন্ধু মিলে আমার বাড়িতে আসেন। পেয়ারা চাষ করবেন বলে জমি বর্গা চান। প্রথমে তাঁদের কথা বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে ভাবলাম এরা সবাই শিক্ষিত বেকার। তাই পাঁচ বছরের জন্য জমি বর্গা দিতে সম্মত হই।’

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: নিলুফা ইয়াছমিন ১৪ উদ্যোক্তার পেয়ারা চাষ প্রকল্প সম্পর্কে জানান,এটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। শিক্ষিত তরুণেরা কৃষিতে এগিয়ে আসায় কর্মসংস্থানের পাশাপাশি কৃষিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ তাঁদের প্রকল্প বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!