করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠান ফাইজার, মডার্না, জনসন এন্ড জনসনসহ (জে এন্ড জে) কোম্পানিগুলোর এখন পরবর্তী বড় লক্ষ্য আরএসভি টিকা বানানো।
আরএসভি ভাইরাসে (রিস্পেরেটরি সিনশিস্যাল ভাইরাস) যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৫০০ শিশু মারা যায়। এছাড়া গত কয়েক দশকে এই ভাইরাসের কারণেই সবচেয়ে বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উচ্চতর গবেষণা সফল হলে চলতি বছরেই এই ভাইরাসের টিকার ডোজ গর্ভবতী নারীদের দেয়া হবে। আরএসভি ভাইরাস প্রায় সবাইকেই কখনও না কখনও আক্রমণ করে। অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই এই ভাইরাসের আক্রমণে হালকা ঠান্ডা-সর্দির উপসর্গ দেখা দেয়। তবে এটা নবজাতক ও বয়স্কদেরও শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়াসহ ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
কয়েক শতাব্দী ধরে এই ভাইরাসটির ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। তবে ১৯৬০ সালে একবার পরীক্ষামূলক ডোজে কয়েকটি শিশুর ভয়াবহ ক্ষতি হলে এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা থেকে পিছিয়ে আসেন বিজ্ঞানীরা।সেবার দুইটি শিশু মারা গিয়েছিল পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের প্রভাবে। আরএসভি ওই সকল শিশুরোগের একটি যেগুলোর এখন পর্যন্ত কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি।
ফাইজার, মডার্না, গ্লাস্কো স্মিথ ক্লিন ও জনসন এন্ড জনসনসহ (জে এন্ড জে) বিশ্বের বড় বড় ফার্মাসিটিউক্যালস কোম্পানিগুলো এখন আরএসভি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ডোজ নিয়ে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে দ্রুত সফল হওয়ায় আরএসভি ভ্যাকসিনের প্রচেষ্টা নতুন গতি পাবে। যদিও ফার্মা কোম্পানিগুলো করোনা মহামারি শুরুর আগেই আরএসভি ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রাথমিক উন্নতি পেয়েছে। ফাইজার, গ্লাস্কো স্মিথ ক্লিন ও জে এন্ড জে জানিয়েছে, বিস্তারিত গবেষণার পর যদি নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হয় তাহলে এই বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়ে আসার পরিকল্পনা তাদের। সেক্ষেত্রে এক একাধিক ডোজ আগামী বছর থেকেই দেয়া সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞ ও কোম্পানিগুলোর মতামত এরকমই।
এই টিকার প্রভাব কেমন হতে পারে?
এই টিকা দেয়া হবে বয়স্কদের এবং গর্ভবতী নারীদের, তাদের অনাগত সন্তানকে জন্মের কয়েক মাস পর্যন্ত আরএসভি ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিবে এই টিকা। অন্যদিকে ঔষধ কোম্পানি সানোফি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা আরএসভি ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য অ্যান্টিবডি-ভিত্তিক একটি ঔষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যা সরাসরি নবাগত সন্তাকেই দেয়া যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শিশু হাসপাতালের রেস্পিরেটরি ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডা. জেনেট এনগ্লুন্ড বলেন, ‘এর প্রভাব হবে বিশাল। এটা মানুষের হাসপাতালে ভর্তির হার কমিয়ে দিবে। ছোট বাচ্চাদেরও এত বেশি হাসপাতালে আসতে হবে না’
এর প্রভাব হবে বিশাল। এটা মানুষের হাসপাতালে ভর্তির হার কমিয়ে দিবে। ছোট বাচ্চাদেরও এত বেশি হাসপাতালে আসতে হবে না।