টিপপরার কারণে পুলিশ তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কয়েকটি নারী সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, শনিবার তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে টিপ পরার কারণে হয় রানির ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক। আমরা বাংলাদেশের না’রী সমাজের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং হয়রানিকারীর দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি দাবি করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হবার পরও এ ধরনের ঘটনা মুক্তিযু’দ্ধের ৩০ লাখ শহিদ, ৫ লাখ না’রীর অবর্ণনীয় ও অসহনীয় যৌ’ন নি’র্যা’তনের শিকার হওয়া এবং বঙ্গবন্ধুর ধ’র্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ার আকাঙ্ক্ষার প্রতি চরম অশ্রদ্ধা। এ ধরনের ঘটনা একইসঙ্গে মুক্তিযু’দ্ধের বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ার চেতনাকে সরাসরি অস্বীকার, মানবাধিকারের মৌলিক চেতনার লঙ্ঘন, না’রীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদের (সিডও) বিরোধিতা এবং ‘কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না’ এই মূলনীতির আলোকে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) বি’রু’দ্ধে দাঁড়ানো।
বাংলাদেশের সংবিধান ধ’র্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, লি’ঙ্গ নির্বিশেষে সকল ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং অঙ্গীকার করেছে যে রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে না’রী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবে। কাজেই কোনো নাগরিক বা রাষ্ট্রের কোনো কর্মচারীই অন্য কোনো নাগরিকের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হয় বা তার ম’র্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজ করবার অধিকার সংরক্ষণ করেন না।
আম’রা লক্ষ্য করেছি, না’রীদের স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত করতে ধ’র্ম ব্যবসায়ী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্নভাবে অ’পচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই গোষ্ঠী প্রায়ই না’রীর পোশাকআশাক নিয়ে জনসমক্ষে আ’প’ত্তিকর আচরণ করছে এবং তাদের বি’রু’দ্ধে স’হিং’স ও যৌ’ন আক্রমণ চালাচ্ছে। এরা ৭১-এর পরাজিত ধ’র্মান্ধ ও মৌলবাদী শক্তি, যারা ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হ’ত্যার মাধ্যমে এ দেশের অগ্রযাত্রাকে লক্ষ্যচ্যুত করেছিল। আম’রা মনে করি, উল্লিখিত হ’য়’রানিকারী পু’লিশ বাহিনীতে ওই গোষ্ঠীরই প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সংবিধানের ২১ (২) ধারায় বর্ণিত আছে- ‘সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযু’ক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য’। সে অনুযায়ী টহলের দায়িত্বে থাকা পু’লিশবাহিনীর একজন সদস্যের কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয় তার দেখভাল করা এবং নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও চলাফেরায় সহযোগিতা দেওয়া। কিন্তু তিনি স্পষ্টতই প্রজাতন্ত্রের চাকুরির সাংবিধানিক শর্ত লঙ্ঘন করেছেন, যা যে কোনো বিবেচনায় মা’রাত্মক অ’প’রা’ধ।
আম’রা আশা করি, কর্তৃপক্ষ অ’ভিযু’ক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনবে এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের যে কোনো নাগরিক বা সরকারি কর্মক’র্তা বা কর্মচারী কর্তৃক মুক্তিযু’দ্ধের চেতনা ও সংবিধান লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা যাতে আর একটিও না ঘটতে পারে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও আম’রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়াও, সকল সচেতন ও সমান অধিকারকা’মী জনগণ ও সাংবাদিকদের প্রতিও এ সমস্ত ঘটনার বি’রু’দ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান জানাচ্ছি।
কপালে টিপ পরায় এক না’রীকে টিট’কারি ও প্রা’ণনাশের চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে না’রীপক্ষ। ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বেলা ১টায় টিপ পরে না’রীপক্ষের প্রতিবাদ অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
না’রীপক্ষের সম্পাদক তামান্না খান পপি বলেন, শনিবার ফার্মগেট এলাকায় ড. লতা সমাদ্দার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তার কপালে পরা টিপ নিয়ে আ’প’ত্তি জানিয়ে পু’লিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি লতাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। লতা এর প্রতিবাদ করায় ওই ব্যক্তি লতার ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যায়। না’রীপক্ষ এ ধরনের অ’প’রা’ধমূলক ও স’হিং’স আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অনতিবিলম্বে অ’প’রা’ধীকে গ্রে’প্তা’র করে বিচারের আওতায় আনার জো’র দাবি জানাচ্ছি।
কপালে টিপ মে’য়েদের সাজসজ্জার অংশ। এছাড়াও হিন্দু বিবাহিত না’রী তার ধ’র্মীয় বিশ্বা’স এবং রীতি অনুযায়ী কপালে টিপ পরে থাকেন। এতে