মেহেরপুরের গাংনীতে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হবার ৫মাস পরেও প্রতিবন্ধী অসহায় রহিমা খাতুনের কপালে জোটেনি ১টি ঘর।
গাংনী উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা বরাদ্দ আসলে দেবেন বলে আশ্বাস দিলেও অদ্যবধি রহিমা খাতুনের জন্য ১টি টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তেঁতুল বাড়িয়া ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামের প্রতিবন্ধী অসহায় রহিমা খাতুনের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রহিমা খাতুনের শেষ সম্বল ৫ কাঠা জমি বিক্রির ৬৫ হাজার টাকাসহ তার বাড়িটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। এতে নগদ টাকা, আসবাবপত্র, ২ টি ছাগলসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভস্মীভূত হয় রহিমা খাতুনের। এর পর থেকেই মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। দুমুঠো ভাত আর ঘুমানোর জায়গা পেতে কত কষ্টই না তাকে করতে হয়েছে।
সংসারে স্বামী, সন্তান কিংবা কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় ঠান্ডা কনকনে শীতে কেঁপেছেন, বৃষ্টি আর ঝড়ে ভিজেছেন, পুড়েছেন রোদে। তবুও দয়া হয়নি কারও মনে, আশ্রয় মেলেনি কারও বাড়িতে। হন্যে হয়ে ঘুরেছেন আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে চেয়ে থেকেছেন কখন আসবে তাকে মিথ্যে আশ্বাস দেওয়া মানুষগুলো একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে। হয়তো সঙ্গে আনবেন একটি কম্বল কিংবা এক বান টিন নিয়ে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু তৈরি করে দিতে। কিন্তু না, কেউ এগিয়ে আসেনি তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানমকে আর্থিকভাবে সহযোগিতার জন্য একটি আবেদন করলেও দীর্ঘ ৪ মাস পর তা হারিয়ে গেছে বলে নতুন করে আবারও আবেদন করতে বলেন।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিকে জানালে এমপি সাহেব ঢাকা থেকে ফিরলে একটি আবেদন করতে বলেন কিন্তু মেহেরপুর-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি সাহেব বরাদ্দ নেই বলে জানান।
তেঁতুল বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম তো কোন খোঁজ খবরই নেননি। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস ও এগিয়ে আসেননি সহযোগিতার হাত বাড়াতে। সাবেক ইউপি সদস্য জাকির হোসেন ও স্হানীয় স্কুল শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম এবং প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পোড়া টিন দিয়েই সপ্তাহ খানেক পূর্বে কোনরকম মাথা গোঁজার ঠাঁই দিতে একটি ঘর করে দেওয়া হয়েছে। পাড়া প্রতিবেশীরা কিছু বাঁশ খুটি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। একটি কলঘর সিস্টেমে ঘর তৈরির কাজ ৪০℅ হয়ে অর্থের অভাবে থেমে রয়েছে।
শুধু থেমে নেই গাংনী উপজেলার তেঁতুল বাড়িয়া ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী অসহায় রহিমা খাতুনের জীবনযাত্রা!
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কতজনকে দিলেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। কি অপরাধ ছিলো অসহায় রহিমা খাতুনের? প্রতিবন্ধী বলে? নাকি স্বামী, সন্তান নেই বলে? নাকি…?
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট নতুন করে আবারও সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
একটি ঘরসহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রহিমা খাতুন রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে বাস করে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এলাকাবাসী অসহায় রহিমা খাতুনের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জোর দাবি জানিয়েছেন।