কর্ণাটকের প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী তরুণের সামনে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি তোলা সাহসী শিক্ষার্থী মুসকান খানের প্রশংসায় যখন পঞ্চমুখ সারা বিশ্ব, তখন উল্টো তার বিরুদ্ধেই উসকানি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী। তার অভিযোগ, মুসকানই নাকি ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া তরুণদের উসকে দিয়েছে।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, কর্ণাটকের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বি সি নাগেশ গেরুয়া উত্তরীয় পরা তরুণদের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, মেয়েটিকে ঘেরাও করার ইচ্ছা ছিল না তাদের (তরুণদের)। কিন্তু সে (মুসকান) যখন চিৎকার শুরু করলো… যে যখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করছিল, তখন তার পাশে একজন শিক্ষার্থীও ছিল না।
মন্ত্রী অভিযোগ করেন, সে (মুসকান) কেন কলেজ ক্যাম্পাসে আল্লাহু আকবার বলে উসকানি দিলো? ক্যাম্পাসে আল্লাহু আকবার বা জয় শ্রীরাম বলতে তো আর উৎসাহিত করতে পারি না।
তিনি বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। সরকার কোনো অপরাধীকেই ছাড়বে না।
মান্দ্যর প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে একা মুসকানের মুখোমুখি হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে রীতিমতো ঝড় তুলেছে। এর সঙ্গে ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজাব ইস্যুতে বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মুসকান কলেজ ক্যাম্পাসে তার স্কুটার দাঁড় করিয়ে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিল। এসময় তাকে দেখে একদল তরুণ ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিতে দিতে তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে এতগুলো ছেলের বিপরীতে একা দাঁড়িয়েই সাহসের সঙ্গে হাত উঁচিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি তুলে পাল্টা চিৎকার করতে থাকে মুসকান। কিছুক্ষণের মধ্যে কলেজের কর্মকর্তারা এগিয়ে এসে তাকে ভেতরে নিয়ে যান।
মুসকান পরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, ওরা আমাকে কলেজের দিকে যেতে দিচ্ছিল না। কারণ আমি বোরকা পরে ছিলাম… ওরা জয় শ্রীরাম বলে চিৎকার করতে থাকে। তাই আমিও আল্লাহু আকবার বলি।
এ কলেজছাত্রী জানিয়েছে, তাকে হয়রানি করা লোকদের মধ্যে বেশিরভাগই বহিরাগত। তাদের মধ্যে বড়জোর ১০ শতাংশের মতো ওই কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।