মতলব উত্তর উপজেলায় কথিত বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে তার প্রকৃত মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত অবধি সহকারী কমিশনার ভূমি ও স্থানীয় থানা পুলিশ সাংবাদিক ও জনসাধারনের সহযোগিতায় মতলব উত্তরের বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযানে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, ছেংগারচর পৌরসভার বারোআনি গ্রামের দম্পতি তামান্না ও আলমের পরিবারে তৃতীয় সন্তান হিসাবে পৃথিবীতে আগমন করেন নবজাতক শিশুটি। তবে স্বাভাবিক ভাবেই জন্ম গ্রহণ করে নি, ছেংগারচর বাজারে পালস্ এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম গ্রহণ করেন শিশুটি। কিন্তু হাসপাতালের সিজারিয়ান অপারেশনের বিল ওঠে চল্লিশ হাজার টাকা যা এই দরিদ্র দম্পত্তির জন্য ছিল এক বিশাল পর্বত সমতুল্য। বিল পরিশোধের উপায়ান্তু না পেয়ে একপর্যায়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে কথিত বিক্রি করে দেন জৈনিক ষাটনল গ্রামের এক নিসন্তান মহিলার নিকট।
জানা যায় পাঁচশত টাকার সমমূল্যের স্টাম্পে এ চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কিন্তু বাড়িতে ফিরে সন্তানের মায়ের সন্তান হারানোর আহাজারি যেন থামছে না। অতঃপর গতকাল বিষয়টি প্রতিবেশী ও স্থানীয় জনসাধারণের মাধ্যমে স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসলে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনসাধারণের সহোযোগিতায় নবজাতক শিশুটিকে গতকাল রাতে উদ্ধার করে তার আপন মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
উদ্ধার কার্যক্রম সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, অভিযান চলাকালীন সময়ে জানা যায় যে এই উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের জনৈক এক মহিলার নিকট শিশুটি রয়েছে। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা পারস্পারিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরল বিশ্বাসে উক্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। বর্তমানে তারা উভয়পক্ষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মুচলেকা প্রদানের মাধ্যমে শিশুটিকে তার প্রকৃত মায়ের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), মতলব উত্তর থানা পুলিশের সদস্যগণ ও স্থানীয় জনসাধারণ।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান ব্যক্তিগতভাবে উক্ত শিশুর তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য তার মায়ের কাছে নগদ অর্থ (৫,০০০/-) টাকা তুলে দেন। এ সময়ে মতলব উত্তর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান তপু উপস্থিত ছিলেন ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, শিশুটি উদ্ধারের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসাধারণ স্বতস্ফূর্ত সহযোগিতা করেন।