ভিন্ন্য সড়কের মতো পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে সড়ক যোগাযোগের অন্যতম সড়ক পথ হচ্ছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি চলাচল একটি রুট । এই ফেরির চাঁদপুর অংশ হরিণা ফেরিঘাটটি নিয়ে নানা অনিয়মে ও অভিযোগের ভিত্তিতে এখন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
দেখা যায় ৭টি ফেরি চলাচল করলেও প্রতিদিনই ফেরির দু’পাড়ে অবস্থান করে ৩ থেকে ৪শ’ যানবাহন। পারাপার হয় প্রায় ৮ শতাধিক এর মতো গাড়ী।
স্পেশাল নামে কিছু গাড়ী আছে তারা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সিরিয়াল ছাড়া পার হয়। কিন্তু দেখা যায় সিরিয়ালে থাকতে হয় অপেক্ষমান নিয়মিত যানবাহনগুলো।
দৈনিক বাংলার অধিকার এর একটি প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহ সময় দেখা যায় চালকসহ যানবাহনগুলো শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে হরিণা পার্কিং ইয়ার্ডে এসে বসে থাকেন আতংকে মধ্যে।
কারণ পুরো পার্কিং ইয়ার্ডটি অরক্ষিত। এসব বিষয় যেন দেখার কেউ নেই। নেই তদারকি নেই ইজরাদারের দেখা শোনা।
বিআইডাব্লিউটি এক কর্মকর্তারা বলছেন দ্রুতই ব্যবস্থা নিবেন।
সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ আশপাশের জেলার অধিকাংশ মালামাল ও গণপরিবহন চলাচলের অন্যতম রুট হচ্ছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি রুট।
পদ্মা-মেঘনা নদীর খরচ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া এই রুটে ২৪ ঘন্টা ফেরি চলাচল করে। চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর অংশ পর্যন্ত সড়ক ব্যবস্থা নিরাপদ থাকার কারণে যানবাহন চলাচল সবসময়ই বাড়ছে।
কিন্তু ফেরির হরিণা অংশে পার্কিং ইয়ার্ডটি গত কয়েকবছর তত্ত্বাবধান না থাকায় ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। অবৈধভাবে রাস্তা পাশে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
রাতের বেলা কোন পাহারাদার না থাকারে সাধারন মানুষের মাঝে ভয় কাজ করে এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই রাস্তায়। দেখা যায় দৈনিক ৪শ’থেকে ৫শ’চালক ও হেলফারের জন্য একটি পানির চাপ কল এবং একটি পায়খানার ব্যবসথা করা আছে তাও সীমানা প্রাচীর এর মধ্যে থাকায় রাতে ও দিনে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চালকদের বিশ্রাম নেয়ার সুযোগও নেই। বিশ্রামাঘারগুলো মাদকসেবীদের আস্থানায় পরিণত হয়েছে।
যানবাহন পারাপারের জন্য ৭টি ফেরি থাকলেও এসব ফেরি খুবই পুরনো। অনেকটা চলাচলের অযোগ্য ফেরি দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাহন নিয়ে চলছে পারপার। নদীতে ঢেউ বাড়লে যান্ত্রিক দুর্বল ফেরিগুলো বন্ধ করে রাখা হয়। যার কারণে প্রতিদিনই আলুবাজার ও হরিণা ঘাটে ৬ থেকে ৮শ’ গাড়ীর দীর্ঘ লাইন থাকে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা চালক আরিফ জানান, হরিণা পার্কিং ইয়ার্ডটি পুরোই অরক্ষিত। রাতের বেলায় লাইট জলে না। পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা খুবই খারাপ। প্রায় সময় ছিনতাই হয়। সিরিয়াল ছাড়া গাড়ী পার হয়। চালক ও হেলফারদের নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করা জরুরি।
খুলনার আরেকজন গাড়ী চালক রুহুল আমিন জানান, ফেরি কম থাকায় প্রচুর জাম থাকে। দুই পাড়ে থাকে দীর্ঘ লাইন। ফেরিগুলো অনেক পুরনো। এসব ফেরিগুলো পরির্তন করা দরকার।
নোয়াখালীর গাড়ী চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানকার ইজারাদারের লোকজন আমাদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করে। দিনের বেলায় গাড়ী পার হলেও রাতে একটি ট্রাকও পার হতে দেয়া না। তারা ইচ্ছেমত টাকা নেয়। নিয়মের বাহিরে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা বেশি নিয়ে গাড়ী পার করে। রাতে এই ঘাটে একটা নৈরাজ্য চলে। মনে হয় এই ইজারাদারকে দেখার কেউ নেই। আমরা সরকারের কাছে এই ঘাটের শৃঙ্খলা আনার দাবী জানাই।
চালক জামাল হোসেন চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন যাবেন ভান্ডারিয়া। তিনি বলেন, হরিণাঘাটে এসেছি থাকতে হবে কমপক্ষে ৩দিন। কিন্তু এখানে থাকার মত সেই ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় আতংকে থাকতে হয়। নেই টয়লেট ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। এগুলো কর্তৃপক্ষের সমাধান করার দরকার। কারণ এই ঘাট দিয়ে আয়ত কম হয় না।
চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাট বিআইডাব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আব্দুন নুর বলেন, আমাদের নিয়মিত ৭টি ফেরি চলে। তবে সব ফেরির সাইজ এক নয়। যার কারণে কম-বেশী বাহন নিয়ে পার হতে হয় বলে বন্ধ রাখা হয়। তবে আরো ফেরি দেয়া হলে তখন এই সমস্যা থাকবে না।
বিআইডাব্লিউটিএ চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা এ.কে.এম. কায়সারুল ইসলাম বলেন, হরিণাঘাটে যানবাহনের যেসব সমস্যা এসব নিরসনে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ চলছে। রাতের আলোর জন্য কাজ করেছি। পানি ও টয়লেট ব্যবস্থা পরিস্কার রাখার জন্য প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অনেক লোক প্রতিদিন টয়লেট ব্যবহার করে, যার জন্য পরিস্কার রাখা খুবই কস্টের ব্যাপার হয়ে যায় । চালক ও যানবাহনের নিরাপত্তার জন্য ইজারাদারকে সোকজ করা হবে।