ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগে ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসনসহ ২১ টি ওষুধ ও মেডিকেল সামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে কয়েক বছর আগে করা একটি মামলা পুনরায় সচল করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।
বুধবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের দিন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া শাখার এক আদেশে সচল করা হয় মামলাটি।মামলার অভিযোগে বলা হয়- চলতি শতকের প্রথম দশকে যখন ইরাকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ চলছিল, সেসময় ২০০৩ সালে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসনসহ ২১ টি কোম্পানি স্বল্প মূল্যে ক্যান্সার চিকিৎসার উপকরণ, হোমোফিলিয়া ইঞ্জেকশন, আলট্রাসাউন্ডস, ইলেকট্রোকার্ডিয়োগ্রাম মেশিনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ বিক্রি করেছিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়- যে সময় এসব পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় হয়েছিল, তার আগেই ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যু হয়েছিল। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তখন নিয়ন্ত্রণ করত জয়শ ই মাহাদি নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, যেটি মধ্যপ্রাচ্যের বিতর্কিত শিয়াপন্থি রাজনৈতিক দল হেজবুল্লাহর মদদপুষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরাক যুদ্ধে জয়শ ই মাহাদির সদস্যদের হাতে যেসব মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিলেন, তাদের কয়েকজনের পরিবারের সদস্যদের করেছিলেন এই মামলাটি। অভিযোগে আরও বলা হয়, এসব কোম্পানির কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে এসব দামি চিকিৎসা উপকরণ কিনে পরে তা চোরাবাজারে বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছে জয়শ ই মাহাদি।
মামলার অভিযোগ সম্পর্কে যাচাই করে ২০২০ সালে এটিকে খারিজ করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া শাখা। মঙ্গলবার একই আদালত সেই মামলটি পুনরায় সচল করার নির্দেশ দিয়েছেন।আদালতের নির্দেশের প্রতিক্রিয়ায় এক যৌথ বিবৃতিতে ফাইজার. অ্যাস্ট্রাজেনেকাসহ ২১ টি কোম্পানি জানিয়েছে, ‘আমরা আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছি এবং আমাদের বিশ্বাস- সামনের দিনগুলোতে এটি প্রমাণিত হবে যে, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী জশুয়া ব্র্যানসন তাৎক্ষনিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে আসামীপক্ষের আইনজীবী ক্যানন শানমুগাম বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে স্বল্পমূল্যে মেডিকেল সামগ্রী সরবরাহ করা একটি মানবিক ব্যাপার। মামলা সচল করার সিদ্ধান্তের ফলাফল খুবই ভয়াবহ হবে এই কারণে যে- এরপর থেকে এসব মানবিক বিষয় কোম্পানিগুলো এড়িয়ে চলবে।’