হারানোর ক্ষত গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে ২০২১ সালে। বিশেষত বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে। মৃত্যুর পাশাপাশি মৃত্যুভয় এ বছরও আচ্ছন্ন করেছে মানুষকে। আমরা হারিয়েছি এমন অনেককে- রাষ্ট্র, সমাজ ও সংস্কৃতিতে যাদের অনুপস্থিতি কখনোই কাটবে না। তারা তাদের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অনুপ্রেরণা জোগাবেন চিরকাল। তাদের শূন্যতাও আমরা অনুভব করব চিরদিন। এমন কয়েকজনকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধাভরে
রফিকুল ইসলাম
স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক ১৯৩৪ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্ম নেন। ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার পাশাপাশি অনেক দুর্লভ আলোকচিত্র ধারণ করেন তিনি। মারা যান ৩০ নভেম্বর।
রাবেয়া খাতুন
জন্ম ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি মারা যান স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক বিজয়ী এই সাহিত্যিক। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি শিক্ষকতা করতেন।
বেগম মুশতারী শফী
‘শহীদজায়া’ হিসেবে সুপরিচিত। জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি। পৈতৃক নিবাস ফরিদপুরে। মুক্তিযুদ্ধকালের শব্দসংগ্রামী, নারীনেত্রী, যুদ্ধাপরাধ বিচার আন্দোলনের সংগঠক। ২০ ডিসেম্বর তার মৃত্যু ঘটে।
হোসেন তৌফিক ইমাম
এইচ টি ইমাম নামে বেশি পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকার পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৫ জানুয়ারি, টাঙ্গাইলে। পরে রাজনীতিতেও যুক্ত হন। গত ৪ মার্চ তার মৃত্যু ঘটে।
হাসান আজিজুল হক
জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান এই কথাসাহিত্যিক নিউমোনিয়া ও হৃদরোগে ১৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
মওদুদ আহমদ
জন্ম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১৯৪০ সালের ২৪ মে। সিওপিডি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ১৬ মার্চ। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এই নেতা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
জন্ম গোপালগঞ্জে ১৯৪১ সালের ৪ জুলাই। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর। করোনা সংক্রমিত হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু ঘটে।
এটিএম শামসুজ্জামান
বিশিষ্ট এই অভিনেতার জন্ম ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। আজীবন সম্মাননাসহ ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। একুশে পদক ও শিল্পকলা পদকে ভূষিত এই ব্যক্তিত্ব ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান।
ইনামুল হক
শিক্ষকতার পাশাপাশি ইনামুল হক নিয়মিত অভিনয় করতেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত ইনামুল হক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনীতে জন্ম তার।
সৈয়দ আবুল মকসুদ
সাংবাদিক, গবেষক ও লেখক। ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের শিবালয়ে জন্ম তার। ২৩ ফেব্রুয়ারি আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু ঘটে তার।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী
মহামারির সময় গত ২৪ মে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর মৃত্যু হয়। তার জন্ম ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার রসুলপুরে।
আবদুল মতিন খসরু
১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় জন্ম হয় এই রাজনীতিক, আইনজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার। ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতিও। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৪ এপ্রিল মৃত্যু হয় তার।
সারাহ বেগম কবরী
ষাট ও সত্তরের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী কবরী পরবর্তী সময়ে চলচ্চিত্র পরিচালনা এবং রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত হন। ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই জন্ম তার। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই সাংসদ ১৭ এপ্রিল মারা যান।
মিতা হক
দেশের অন্যতম রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক ১১ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একুশে ও শিল্পকলা পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পীর জন্ম ১৯৬২ সালে।