আজ ১৭ ডিসেম্বর রোজ শুক্রবার পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধ্যানগ্রাম চৌধুরীপাড়ায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ (দেবীগঞ্জ উপজেলা) শাখার উদ্যোগে প্রথম বৈদিক পাঠশালা’র শুভ উদ্বোধন করা হয়।
এসময় প্রায় ৪০ জন সনাতন ধর্মালম্বী কিশোর ছেলে-মেয়ে ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে শ্রীমদভগবদগীতা বিতরণ করা হয়েছে।
উক্ত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক সুমন রায়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২নং শালডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মদনমোহন রায়,দেবীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ এর সদস্যবৃন্দ,অভিভাবকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা।
দেবীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ এর সভাপতি সবুজ চক্রবর্তী’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং এরই মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করলো দেশের প্রথম “বৈদিক পাঠশালা” এর শিক্ষা কার্যক্রম।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্রমহাসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র রনি রাজবংশী ডেইলি সিলেট নিউজ24’কে বলেন,”জ্ঞানং তেহহং সবিজ্ঞানমিদং বক্ষ্যাম্যশেষতঃ।যজ্ জ্ঞাত্বা নেহ ভূয়োহন্যজ্ জ্ঞাতব্যমবশিষ্যতে।।জ্ঞানম্, তে, অহম্, স-বিজ্ঞানম্, ইদম্, বক্ষ্যামি, অশেষতঃ,যৎ, জ্ঞাত্বা, ন, ইহ, ভূয়ঃ, অন্যৎ, জ্ঞাতব্যম্, অবশিষ্যতে “।। বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষ অজ্ঞানতার অন্ধকারে আবদ্ধ। ভগবদ গীতার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মনুষ্য সমাজকে সেই অন্ধকার থেকে মুক্ত করা।
প্রতিটি মানুষই নানা কারণে দুঃখ ভোগ করছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মোহাচ্ছন্ন হওয়ার জন্য আমরা বুঝতেই পারি না কেন আমরা দুঃখ কষ্ট ভোগ করছি।কারণ মায়া,মোহ,অহংকার এর বেড়াজালে আবদ্ধ ও বর্তমান ডিজিটাল সময়ের বাংলাদেশে সনাতন ধর্মালম্বী ছেলে,মেয়েদের মধ্যে একদল ধর্মব্যবসায়ী ভুল জ্ঞান,কুসংস্কার ও উগ্রতার বীজ বপন করে চলেছে। ভুলে গেলে চলবেনা,’ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা মানুষের জীবনে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। শ্রীমদ্ভগবদগীতা কেবলমাত্র একটি ধর্মগ্রন্থ নয়।
ভগবত গীতা কে সবাই সফল এবং সন্তুষ্ট জীবন যাপন করার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দিশা হিসাবে স্বীকার করেন।গীতায় আধ্যাত্মিকতার সাথে সাথে দর্শনশাস্ত্র ও আছে। এতে মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান আছে।এমনকি বিশ্বের সকল মহান উপদেশ শাস্ত্রের মধ্যে গীতায় একমাত্র শাস্ত্র যা যুদ্ধের ময়দানে দেয়া হয়েছে।ভগবদ গীতায় স্পষ্ট বলা আছে যে,আমাদের বাইরের শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করলে হবে না। যুদ্ধ করতে হবে আমাদের ভেতরের শত্রুর সাথে। যখন কোন মানুষ তার কর্তব্য সম্পন্ন করতে পারে না তখন ভগবদ গীতা তার সমস্ত কর্তব্যবোধ কে জাগ্রত করে এবং তার সব সন্দেহ ও অজ্ঞতাকে দূর করে তার জীবন,আধ্যাত্ম ও মুক্তির সঠিক পথ দেখায়।জীবনে আমাদের অনেক শত্রু আছে।সে শত্রু শুধুমাত্র বাইরের পার্থিব জগতে নয়,তা আমাদের মধ্যেও আছে,আমাদের মনেও আছে।সঠিক পথ এবং মুক্তির জন্য এই শত্রুদের উপর নিয়ন্ত্রণ ও বিজয় পাওয়ায় গীতার মুখ্য উদ্দেশ্য ‘। সেই সঠিক পথ ও মুক্তির জন্য গীতার জ্ঞানে সমাজের ছেলে-মেয়েদের আলোর পথ দেখাতেই আমাদের এই বৈদিক পাঠশালা’র উদ্যোগ।
সাধারণ সম্পাদক;সৈকত কুন্ডু বলেন, ‘পঞ্চগড় জেলা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় আমাদের বৈদিক পাঠশালা কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হয়েছি। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটি এর সভাপতি;তাপস বৈরাগী, আন্তর্যাতিক সম্পাদক শুভ রাজবংশী সহ
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্রমহাসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটি এর সভাপতি;শিশির মজুমদার বকুল,সাধারণ সম্পাদক;পিযুষ চন্দ্র দাস,মুখপাত্র;রনি রাজবংশী, সাংগঠনিক সম্পাদক; আকাশ চন্দ্র শীল,দপ্তর সম্পাদক;সাগর চন্দ্র বর্মন,আইসিটি সম্পাদক;বিধান সরকার অর্ঘ্য,প্রচার সম্পাদক;অরুন কুমার রায় ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা;সৃষ্টি রায় রত্না’র প্রতি। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে বৈদিক পাঠশালা করা।
এরই মাধ্যমে সনাতন ধর্মালম্বী বাচ্চাদের হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে সঠিক ও সুশিক্ষা প্রদান করা।তাতে করে তাদের ভিতর হিন্দু ধর্মের সুস্থ বীজ বপন হবে ও উগ্রতা,কুসংস্কার পরিহার করে আগামীতে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারবে। এই বৈদিক পাঠশালা কার্যক্রম আমাদের কমিটির সদস্যদের সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে ও পরিচিতদের অনুদান দ্বারা অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের চিন্তাভাবনা পুরো বাংলাদেশ ব্যাপী এই বৈদিক পাঠশালা কার্যক্রম দ্রুত গতিতে সম্প্রসারিত করা,তাই দেশ ও বিদেশের সকল উদার সনাতন ধর্মালম্বী দিদি ও দাদাদের সহযোগিতা কামনা করছি ‘।